জগন্নাথপুরে পৃথক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩৫

0
504
blank

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। সংঘর্ষে মোট ২৪ রাউন্ড বন্দুকের গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের খাশিলা গ্রামে। এ নিয়ে এলাকায় থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারো বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, গত কয়েক দিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খাশিলা গ্রামের যুবলীগ নেতা দুদু মিয়া ও যুবদল নেতা সিপন মিয়ার লোকজনের মধ্যে বিরোধ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এরই জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় দুদু পক্ষের ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ মোট ২১ রাউন্ড গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে মুখোমুখি সংঘর্ষের আহবান জানিয়ে চ্যালেঞ্জ করলে আবারো দুই পক্ষের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। প্রায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে আরো ৩ রাউন্ড গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে থানা পুলিশ। ততক্ষনে সংঘর্ষে দুদু মিয়া, হদিস মিয়া, শফিক মিয়া, আকুল মিয়া, আবুল লেইছ, রুমন মিয়া, মাসুক মিয়া, স্বপন মিয়া, মাহতাব মিয়া, মুক্তার মিয়া, জাবেক মিয়া, রফিক মিয়া, আকিক মিয়া, তুলন মিয়া, নুর ইসলাম, ফয়জুল ইসলাম, সফর আলী, জাহির আলী, শফিকুল ইসলাম, সুন্দর আলী, নাজমা বেগম, আম্বর আলী, ইউসুফ মিয়া, শাহজাহান আলী, সিরাজ উদ্দিনসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। এর মধ্যে দুদু পক্ষের ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ মোট ১৫ জন আহতদের মধ্যে ১৪ জনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও সিপন পক্ষের ১৫ জন আহতদের মধ্যে ৭ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যান্য আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্সে ভর্তিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

জগন্নাথপুর থানার ইমার্জেন্সি অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ২০/৩০ জন লোক আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।

প্রসঙ্গত-গত কয়েক দিন আগে খাশিলা গ্রামের একটি সরকারি জলাশয়ে মাছ ধরা নিয়ে গ্রামের গফুর মিয়া ও আংগুর মিয়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আংগুর মিয়া পক্ষের নারীসহ ৫ জন আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গফুর মিয়ার পক্ষে যুবলীগ নেতা দুদু মিয়া ও আংগুর মিয়ার পক্ষে যুবদল নেতা সিপন মিয়া অবস্থান নেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। পরে আবার সিপন পক্ষের লোকজনের হামলায় দুদু পক্ষের আরেক জন আহত হন। এরই জের ধরে গত সোমবার রাত ১২ টার দিকে এক পক্ষে আরেক পক্ষেকে মুখোমুখি সংঘর্ষের আহবান জানিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় এক এক করে ৭ রাউন্ড বন্দুকের ফাঁকাগুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জগন্নাথপুর থানায় উভয় পক্ষের পৃথক মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে এক পক্ষের দায়ের করা মামলার ৩ আসামিকে গ্রেফতার করে সুনামগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।

এদিকে-জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামে পূর্ব বিরোধের জের ধরে গ্রামের ফুল মিয়া ও উজ্জল মিয়ার লোকজনের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হচ্ছেন, উজ্জল মিয়া, নানু মিয়া, মোহন মিয়া, ফুল মিয়া, মইন উল­াহ। আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্সে ভর্তিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।