জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪ কারণে আ.লীগের ভরাডুবি ও ৩ কারণে বিএনপির সহজ বিজয় হয়েছে। নীতিতে অটল বিএনপি ও বিপথগামী আ.লীগ। আ.লীগের ভোটে বিএনপির সহজ বিজয়ের বিষয়টি বেশি আলোচিত।
জগন্নাথপুরে আ.লীগের দলীয় কোন্দলের প্রভাব পড়েছে নির্বাচনী মাঠে। আ.লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আকমল হোসেন মান্নান গ্রুপের হওয়ায় ডন গ্রুপের আ.লীগ নেতাকর্মীরা বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ছিলেন। যার প্রমাণ হচ্ছে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদের গ্রামের বাড়ি ভূরাখালি কেন্দ্রে ধানের শীষ লিড করেছে। দলীয় কোন্দলে বিপথগামী হয়ে ডন গ্রুপের আ.লীগের নেতাকর্মীরা ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে বিজয়ী করেছেন। দলীয় কোন্দল, নীতিতে বিপথগামী হওয়া, বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা ও নির্বাচনে টাকা না ছাড়াসহ ৪ কারণে আ.লীগের ভরাডুবি হয়েছে। এদিকে-দলীয় কোন্দল হলেও নীতিতে অটল থাকা, টাকার জোর ও আ.লীগের বোনাস ভোট পাওয়াসহ ৩ কারণে বিএনপির সহজ জয় হয়েছে বলে উভয় দলের অনেক নেতাকর্মী ও ভোটাররা জানান।
আ.লীগের ঘাটি খ্যাত জগন্নাথপুরে বিএনপির বিজয় নিয়ে সচেতন মহল চুলছেড়া বিশ্লেষন করছেন। এতে বেড়িয়ে আসে আ.লীগের দুর্বলতা ও বিএনপির পূর্ণতা। সচেতন মহল ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকে জানান, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জগন্নাথপুরে আ.লীগ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানের অনুসারিদের নিয়ে মান্নান গ্রুপ ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের পুত্র আজিজুস সামাদ ডন অনুসারিদের নিয়ে আরেকটি ডন গ্রুপ নামে এলাকায় পরিচিতি পায়। বিগত পৌরসভা ও ইউনিয়ন নির্বাচনেও পৃথকভাবে দুই গ্রুপ কাজ করেছেন। প্রতিটি গ্রুপ একে অন্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে গিয়ে অনেক সময় দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এবারের উপজেলা নির্বাচনেও তাই হয়েছে। এ নির্বাচনে ডন গ্রুপের কোন প্রার্থী ছিল না। এ সুযোগে মান্নান গ্রুপের বিপক্ষে পরোক্ষভাবে অবস্থান নিয়ে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে বিজয়ী করা হয়। নির্বাচনে বিএনপির একক প্রার্থী থাকলেও আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তাদির আহমদ মুক্তার কারণে ও নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি হলেও টাকা না ছাড়ার কারণে আ.লীগের ভরাডুবি হয়।
অপরদিকে- বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের সাথে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমানের কোন সমন্বয় না থাকলেও নীতিতে অটল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রার্থীকে নয়, দলীয় প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করেছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ.লীগের প্রার্থী বিজন কুমার দেব তাঁর দলীয় ইমেজে নির্বাচিত হন। তবে জমিয়তের প্রার্থী ছালিম আহমদ কাসেমী’র কারনে বিএনপির প্রার্থী সুহেল আহমদ খান টুনুর পরাজয় হয়। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে বিএনপির প্রার্থী ফারজানা আক্তার বিজয়ী হয়েছেন।
এ ব্যাপারে স্বীকার করে জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু জানান, দলীয় কোন্দলের কারণে ও আ.লীগের একাংশের ভোট ধানের শীষে প্রদান করায় নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। তবে আ.লীগের বোনাস ভোটে ও টাকার জোরে আতাউর রহমান বিজয়ী হয়েছেন।