জগন্নাথপুরে সেটেলমেন্ট কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যে প্রবাসীর ২৫ লাখ টাকার জমি হাতছাড়া

0
511
blank
blank

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: জগন্নাথপুরে সেটেলমেন্ট কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যে এক আমেরিকা প্রবাসীর ২৫ লাখ টাকার জমি হাতছাড়া হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে জমি দখল নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের অলইতলী গ্রামের মৃত হাজী চান মিয়ার ছেলে আমেরিকা প্রবাসী মখলিছুর রহমান ১৯৯৫ইং সালে স্থানীয় অলইতলী মৌজার জে এল নং ২২২ এর বিভিন্ন দাগে প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৬ একর পৈত্ত্বিক জমি নিজ নামে নামজারি করিয়ে খাজনা পরিশোধ করেন এবং রিটার্ন দাখিল করেন। এ সময় অলইতলী গ্রামের আব্দুল হান্নান ও দুদু মিয়া নামের ব্যক্তিরা এ জমির মালিকানা দাবি করে প্রবাসীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তাদের দায়ের করা মামলা নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। প্রতিটি আদালতের রায় পান প্রবাসী মখলিছুর রহমান। সকল মামলার রায় পেয়ে জমির কাগজপত্র ঠিকটাক করে আবার আমেরিকা ফিরে যান মখলিছুর রহমান।

এদিকে- প্রবাসী মখলিছুর রহমান বাড়িতে না থাকার সুযোগে জগন্নাথপুরে সেটেলমেন্ট অফিসের কার্যক্রম শুরু হলে প্রবাসীর প্রতিপক্ষের লোকজন অত্যান্ত গোপনে ও কৌশলে মাঠ আমিনকে ম্যানেজ করে এসব জমির মাঠ পর্চা তাদের নামে করিয়ে নেয়। খবর পেয়ে প্রবাসী মখলিছুর রহমান দেশে ফিরে জগন্নাথপুর সেটেলমেন্ট অফিসে ২৯ ও ৩০ ধারা আপত্তি মামলা করেন। এসব মামলার রায়ও প্রবাসীর পক্ষে যায়।

অবশেষে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী মখলিছুর রহমান আমেরিকা থাকার সুযোগে প্রতিপক্ষের দায়ের করা ৩১ ধারা আপিল মামলার রায় এক তরফাভাবে প্রদানের মাধ্যমে আমেরিকা প্রবাসী মখলিছুর রহমানের প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৬ একর জমি অলইতলী গ্রামের ফিরোজ মিয়া, সাজন উদ্দিন গং, শফিক মিয়া, আব্দুল মখলেস, লালু খা, ওয়াজিবুর রহমান, সুফিয়া খানম, ঠাকুর মিয়া ও আব্দুল বাকি নামের ব্যক্তিদের নামে প্রদান করেন সিলেট সেটেলমেন্ট জোনাল অফিসের সহকারি জোনাল কর্মকর্তা মহিতোষ পাল। এ রায় প্রদান নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে আপিল মামলার রায় পাওয়া পক্ষের লোকজন এসব জমি দখল করতে গেলে প্রবাসী পক্ষের লোকজন বাধা দিলে বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।

এ ব্যাপারে ৮৬ বছরের বৃদ্ধ আমেরিকা প্রবাসী মখলিছুর রহমান বলেন, আমি হচ্ছি এসব জমির মুল এসএ মালিক। আমি কারো কাছে কোন জমি বিক্রি করিনি। এসব আমার মৌরশী পৈত্ত্বিক সম্পত্তি। আমার পক্ষে নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত পর্যন্ত রায় প্রদান করেছেন। সেটেলমেন্ট অফিস ২৯ ও ৩০ ধারা মামলার রায়ও আমার পক্ষে দিয়েছে। অথচ ৩১ ধারা আপিল মামলার রায় আমার বিরুদ্ধে দিয়ে অবিচার করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার অবর্তমানে অতি গোপনে বড় অংকের ঘুষের বিনিময়ে ৩১ ধারা আপিল মামলার রায় অবৈধভাবে প্রতিপক্ষকে দিয়ে দুই পক্ষকে সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছেন ঘুষখোর সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মহিতোষ পাল ও তার সহযোগি আব্দুল কাদির। এখন আবার আমাকে বলা হয়, রিভিউ মামলা করার জন্য। রিভিউ মামলা করলে রায় আমার পক্ষে দেয়া হবে বলে সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মহিতোষ পালের সহযোগি আব্দুল কাদির শান্তনা দিয়ে প্রতারণা করছেন। এ ব্যাপারে ফোন রিসিভ না করার কারণে চেষ্টা করেও সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মহিতোষ পালের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।