জঙ্গিদের দলই হলো আওয়ামী লীগ: খালেদা জিয়া

0
495
blank
blank

ঢাকা: বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, জঙ্গিদমনকে আমরা সমর্থন করি। কিন্তু এই জঙ্গি সব আওয়ামী লীগের সাথে। জঙ্গিদের দলই হলো আওয়ামী লীগ। এদের কাছে অস্ত্র পাওয়া যাবে, এদের কাছে আছে বন্দুক, গোলা বারুদ, দেশী-বিদেশী সব রকমের অস্ত্র। এসব জঙ্গিদের ধরতে পারলেই সত্যিকারের বিচার হবে, দেশে শান্তি-নিরাপত্তা আসবে।

রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এর উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি প্রধান এসব কথা বলেন। ইফতার মাহফিলে এতে সহস্রাধিক সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মী অংশ নেন।

দেশে জঙ্গিদমনের নামে সারাদেশে যে ‘সাঁড়াশি অভিযান’ হয়েছে, তাতে গ্রেফতারকৃতদের প্রায় সকলেই সাধারণ মানুষ ও বিএনপির নেতা-কর্মী’ বলে দাবি করেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ওই অভিযানে (সাঁড়াশি অভিযান) ১৫ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এদের মধ্যে অধিকাংশই নিরহ সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে তিন হাজারের বেশি বিএনপির নেতা-কর্মী। আমরা অবিলম্বে তাদের মুক্তি চাই।

খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সময়ে আমার মামলা ছিলো পাঁচটি, হাসিনার মামলা ছিলো ১৫টি। নাইকো মামলা একসাথে আছে। কাজেই সেই নাইকো মামলায় হাসিনার অভিযোগ উঠে যায়, আমার মামলা তারা কী করে চালায়?

তিনি বলেন, হাসিনার সময়ে তার নির্দেশে নাইকো চুক্তিসহ সব কিছু হয়েছে। আমার সেখানে কোনো ভুমিকাই নাই। তারপরও তার মামলা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। কেবল তাই নয়, হাসিনার ১৫টি মামলা কিভাবে উঠে যেতে পারে? তার মামলা উঠে গেলে অন্য কারো মামলা থাকতে পারে না। হাসিনার মামলাগুলো অবৈধ ছিলো, সেজন্য আদালত সেগুলো তুলে নিয়েছে। আর আমাদের মামলাগুলো রেখে দিয়েছে। আমরা বলব, ন্যায় বিচার এখানে নেই।

তিনি বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। অন্যায়ভাবে বিচার করা হচ্ছে। যেখানে বিচার বিভাগের ওপরে জনগণের আস্থা উঠে যাচ্ছে। আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই। বিচার বিভাগের ওপরে সরকারের হস্তক্ষেপ হচ্ছে মন্তব্য করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ বলেছেন, বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করা যাবে না। সাদা কাপড় পরে কাউকে অ্যারেস্ট করা যাবে না। কিন্তু এখন নিয়ত সাদা কাপড় পরে গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং মানুষকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ক্রসফায়ার আদালত নিষিদ্ধ করেছে। প্রমাণ না হলে সেটা ক্রসফায়ার হতে পারে না। যেখানে একটা লোককে আদালত থেকে ১০ দিনের রিমান্ডে এনেছে, সেখানে ডিবি কিভাবে হ্যান্ডকাপ পরা অবস্থায় তাকে গুলি করে ফেলে দেয়। আর বলা হয়, ক্রসফায়ার। এটা ক্রসফায়ার নয়, এটা হত্যা। এতে প্রধানমন্ত্রীর সম্পৃক্ততা আছে বলেও অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, মঈনুদ্দিন-ফখরুউদ্দিনের সরকার যেসব মামলা দিয়েছে, সেসব মামলায় এখনো আমাদের নেতা-কর্মী কারাগারে। এখনো আমাদের প্রতিটি মামলা রয়েছে। যেখানে আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা নেই সেখানে নিরপেক্ষ বিচার পাওয়া যায় না, ন্যায় বিচার পাওয়া যায় না।

সাংবাদিক ইউনিয়নকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইফতার করতে না দেয়ায় প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষের কঠোর সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া।

বক্তব্যের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, সদ্য কারামুক্ত বিএফইউজের সভাপতি শওকত মাহমুদ, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ, ডিইউজে সভাপতি আবদুল হাই শিকদারকে নিয়ে একই টেবিলে বসে ইফতার করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এছাড়াও ছিলেন বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর মসিউল আলম, সুপ্রিম কোর্টের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমূখ।

ইফতারে সিনিয়র সাংবাদিকদের মধ্যে কবি আল মুজাহিদী, নুরুল হুদা, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, মুন্সি আবদুল মান্নান, আব্দুস শহীদ, বাকের হোসাইন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএফইউজের সভাপতি শওকত মাহমুদের স্ত্রী কবি ফেরদৌসী মাহমুদ, বিএনপির অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, খায়রুল কবির খোকন, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া, তৈমুর আলম খন্দকার, সাখাওয়াত হোসেন জীবন, রফিক শিকদার, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, খেলাফতে মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া অংশ নেন।