জনগণের ক্ষতি করে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দরকার নেই: আ স ম রব

0
986
blank
blank

ঢাকা: জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, দেশ ও জনগণের ক্ষতি করে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দরকার নেই। জেএসডি’র উদ্যোগে তোপখানা রোডন্থ আজ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে দেয়া সূচনা বক্তব্যে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব একথা বলেন।
আ স ম আবদুর রব আরো বলেন, দেশীয় গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি হওয়া মাওয়া, খুলনার লবনচরা ও চট্টগ্রামের আনোয়ারার কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৪ টাকায় পিডিবি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে পারবে। আর রামপালে ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি থেকে বিদ্যুৎ কিনতে হবে প্রতি ইউনিট ৮ টাকা ৮৫ পয়সা দামে। এতে ৩০ বছর বিদ্যুৎ পেলে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত দাম দিতে হবে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া নির্গত বর্জ্য, কৃষি উৎপাদন, মৎস্য ও মধু-গোল পাতা-কাঠ প্রাপ্তি হ্রাস ইত্যাদির ফলে ক্ষতি হবে লাখ লাখ কোটি টাকা। এরপরও এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কার স্বার্থে? কেন সরকার সর্বস্তরের জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে তা খুবই রহস্যজনক।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কর্মসূচী ঘোষণা উপলক্ষে জেএসডি’র এ সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কর্মসূচী ঘোষণা উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন। উপস্থিত ছিলেন জেএসডি নেতা এম এ গোফরান, মো: সিরাজ মিয়া, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ বেলায়েত হোসেন বেলাল, মোশারফ হোসেন, আবদুর রাজ্জাক রাজা প্রমুখ।
আবদুল মারেক রতন উপস্থাপিত লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য একান্ত অপরিহার্য। তবে দেশের ভূ-প্রকৃতি, বনজ ও জলজ সম্পদ, কৃষি উৎপাদন, মৎস্য সম্পদ, জীব বৈচিত্র ও মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর, সুস্থ পরিবেশ বিধ্বংসী বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া কোনভাবেই কাম্য নয়। সরকার বাগেরহাটের রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে তা শুধু উপরোক্ত ধ্বংসই সাধন করবে না, অর্থনৈতিকভাবেও দেশকে বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে। কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের মত একটি ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের জন্য যে চরম ক্ষতিকর এ সম্পর্কে দেশের পরিবেশবিদ, বিজ্ঞানীসহ সর্বস্তরের জনগণ একমত। সাম্প্রতিককালে ইউনেস্কো, বিশ্বব্যাংকসহ বিশ্বের ১৫০টির বেশি সংগঠনও এ প্রকল্পের প্রতিবাদ করেছে। ভারতের পরিবেশবাদীরাও এ প্রকল্প বন্ধের জন্য বাংলাদেশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির দাবিতে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিকট দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার প্রাকৃতিক দেয়াল ও দেশের ফুসফুস হিসেবে বিদ্যমান সুন্দরবন আজ শুধু বাংলাদেশের সম্পদ নয়, ইউনেস্কোর ঘোষণা মোতাবেক তা আজ বিশ্ব হেরিটেজ এর অংশ। তাই রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে সুন্দরবনের উপর যে হুমকি সৃষ্টি করা হচ্ছে তাতে সারা দুনিয়ার সচেতন মানুষ উদ্বিগ্ন। সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ১৯ নভেম্বর শনিবার বাগেরহাটে জনসভা করে রামপাল অভিমুখে মিছিলের কর্মসূচি দেয়া হয়।