টার্গেট কি এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী?

0
577
blank
blank

নিজস্ব প্রতিবদক: তিনি চিকিৎসক। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমাও আছে। কিন্তু তিনি নিজের পেশায় না থেকে চুক্তিতে খুন-খারাবি করেন। এমনকি নিজের বাড়িতে অস্ত্রের ভান্ডারও গড়ে তুলেছেন। এই চিকিৎসকের নাম মো. জাহিদুল আলম কাদির। কিন্তু চিকিৎসকরে আড়ালে তিনি্একজন ‘কন্ট্রাক্ট কিলার’!

যুক্তরাজ্যে থাকা এক ব্যক্তির কাছ থেকে সিলেট অঞ্চলের এক সংসদ সদস্যকে খুন করার কন্ট্রাক্ট নিয়েছিলেন তিনি। সেই জাহিদুল আলম কাদিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। আর তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের সংসদ সদস্যরা রয়েছেন চরম আতংকে। আর ডা. জাহিদকে গ্রেফতারের পর সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরীর ফেইসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

জাহিদকে গ্রেফতারের পর শুক্রবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে নিজের ফেইসবুক আইডিতে তিনি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে। আর এতে তিনি বুঝাতে চেয়েছেন তাকেই তার্গেট ছিলো খুনির।

তিনি স্ট্যাটাসে লিখেছেন-

“মহান আল্লাহ পাক হেফাজতের মালিক-মান সম্মান ও ইজ্জতের মালিক, সকলের দোয়া সাথে থাকলে কোন অপশক্তিই ক্ষতি করতে পাবরে না আপনাদের দোয়া চাই।”
আর এরপর থেকে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন ‘কন্ট্রাক্ট কিলার’ যেখানে একজন বর্তমান সংসদ সদস্যকে হত্যার চুক্তি হয়েছিল সেখানে তিনি কিভাবে টার্গেট হবে। আসলে ঘটনা কোন দিকে মোড় নিচ্ছে?”

 

এদিকে সিলেট-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ন-মহাসচিব ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া শফিক চৌধুরীর স্ট্যাটাসটি ফেইসবুকে আপলোড করার পর তিনিও একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

তিনি লিখেছন-

“সমস্থ প্রশংসা সেই মহান প্রভুর, যার হাতে জীবন মৃত্যু আর তিনিই সর্ব উত্তম হেফাজতকারী।
সিলেট বিভাগের একজন এমপি হত্যার পরিকল্পক ধরা পড়ার পর থেকে আত্বীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তাই উক্ত বিষয়টা আমি একটু পরিস্কার করতে চাই,
গত মার্চ মাস থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এব্যাপারে কিছু তথ্য ছিল। উনারা বেশ কয়েকবার আমাকে সতর্ক করেছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কিলারদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে এখন এদেরে মূলহোতা এবং বেনীফিসারিদে কে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
সিলেটে সব সময়ই রাজনৈতিক সম্প্রতি সৌহারদ পূর্ন পরিবেশ ছিল এবং আমি বিশ্বাস করি আজও সেই পরিবেশ বিরাজমান আছে। তাই ক্ষমতায় যাওয়া বা এমপি হওয়ার জন্য অন্য একজনকে হত্যা করা হবে এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।
তবুও সময় বদলেছে সাথে সাথে বাড়ছে হিংস্রতাও, এহেন অবস্থায় সার্থসিদ্ধির জন্য যে কেউ পশুর মত আচরণ করবেনা সেটাও উড়িয়ে দেওয়া যায়না।
যাইহোক অন্যকে হত্যা করে যারা নিজেকে প্রতিষ্টিত করতে চায় তাদের জন্য পবিত্র এই রামাজান মাসে আল্লাহতালার কাছে হেদায়াত ও মাগফিরাতের দোয়া করি, আর হেদায়েত যদি নসিবে না থাকে তাহলে দেশ এবং সমাজ আর মানুষ এর নিরাপত্তার সার্থে দৃষ্টান্ত মূলক ফায়সালা করুন।
“আল্লাহু খাইরো হাফিযাও ওয়াহুওয়া আরহামুর রাহিমিন”।”

এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরীর ঘনিষ্টরা জানান, গত মার্চ মাস থেকেই তাকে কে বা কারা হত্যার টার্গেট করেছে। আইন শৃংখলা বাহিনির কাছে এমন তথ্যও ছিলো। আর এ তথ্যের বিত্তিতে তাকে গানম্যান নেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি এতে রাজি হয়ন নি। আর সর্বশেষ এই চক্রটিই সম্ভবত গতকাল ধরা পড়েছে।

নিজের স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট- আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, এরা হয়তো আমাকেই টার্গেট করেছিল। আল্লাহ ভালো জানেন, তাঁর হাতেই সকলের ভালোমন্দ নিহিত।

ডা. জাহিদ একজন বর্তমান সংসদ সদস্য হত্যার চুক্তির কথা স্বীকার করলেও তিনি সাবেক সংসদ সদস্য হয়ে কেনো তাকে হত্যার চুক্তি হতে পারে বলে মনে করেন এমন বিষয়ে দৃষ্ট আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে সিলেট অঞ্চলে কোন শক্তিশালী এমপি নেই যে বিএনপি, জামায়াত ও জঙ্গিদের বিরোদ্ধে কথা বলার। যা বলার তা আমাকেই বলতে হয়। এজন্য আমাকে টার্গেট করা হতে পারে।

(সূত্র: আজকের সিলেট)