দক্ষিণ সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ মুখোমুখি

0
565
blank
blank

সুনামগঞ্জ: দক্ষিণ সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুই পক্ষের আগামীকাল সোমবার একই স্থানে একই সময়ে শোক সভা আহবানকে কেন্দ্র করে প্রতিমন্ত্রি এম.এ মান্নান ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালামের সমর্থক নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, জেলার ন্যায় সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল এখন চরম আকার ধারণ করেছে। প্রায় এক বছর ধরে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান এড়িয়ে চলছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালামকে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও মন্ত্রীর কোনো মঞ্চে উঠছেন না।

ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান আবুল কালাম উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সভা সমাবেশ করে নিজেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করছেন। এ নিয়ে মন্ত্রী ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে আরও দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কর্মী সমর্থকরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম ও পূর্ব পাগলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আগামীকাল সোমবার স্থানীয় পঞ্চগ্রাম চিকারকান্দি বাজারে শোকসভার আয়োজন করেছে। সভায় প্রধান অতিথি রাখা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানকে। এছাড়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, পৌরমেয়র আয়ূব বখত জগলুল সভায় থাকবেন বলে প্রচারপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে একইদিনে সভা আহবান করেন মন্ত্রী বলয়ের নেতাকর্মীরাও। শুক্রবার চিকারকান্দি বাজারে প্রস্তুতি সভা করেন তারা। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী সোমবার বিকেল ৩টায় শোকসভার আয়োজন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন।

শনিবার কালাম বলয়ের কর্মীরা মাইকিং করতে গেলে রিকশা আটকিয়ে মাইক নিয়ে যান মন্ত্রী বলয়ের কর্মীরা। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় কালাম বলয়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে। সুনামগঞ্জে জরুরি বৈঠক শেষে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, যে কোনো মূল্যে আমরা শোকসভা পালন করবো। জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জাতীয় শোকসভায় বাধা দেয়ার অধিকার কারো নেই। প্রচারের মাইক কেড়ে মন্ত্রীর উচ্ছৃঙ্খল ছেলেরা রাজনীতিতে খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

তবে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তহুর আলী বলেন, এই এলাকার এমপি-মন্ত্রী এমএ মান্নান। আমাদের আওয়ামী লীগ পরিবারের অভিভাবক। তাকে না জানিয়ে, তাকে অতিথি না করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের কোনো সভায় অন্য কারো নাম ঘোষণা হতে পারে না।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হেকিম বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা ১৫ দিন ধরে চিকারকান্দি বাজারে শোকসভার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দের পরামর্শে এবং তাদের অতিথি করেই সভা করছে। হঠাৎ যারা সভা বানচাল করতে পাল্টা সভা আহবান করেছে তারা আওয়ামী লীগার নয়। তারা অযথা ঝামেলা করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, একই স্থানে দুটি সভা হতে পারে না। পরিস্থিতি বুঝে আমরা ব্যবস্থা নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির বলেন, শুনেছি একটা পক্ষ সভা করবে। মাইকিংও হচ্ছে। অন্য কেউ করতে চাইলে আমরা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব।