দূষিত বায়ুর রাজধানীতে ঢাকা দ্বিতীয়

0
752
blank
Dushito Poribesh Dhaka
blank

• যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান এয়ারভিজ্যুয়ালের প্রতিবেদন
• বিশ্ব বাতাসের মান প্রতিবেদন ২০১৮ মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়
• বিশ্বের ৭৩টি দেশের বায়ুর মানের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি
• শহরের তালিকায় ঢাকা ১৭তম, রাজধানীর তালিকায় দ্বিতীয়
• ঢাকার বাতাসে ক্ষুদ্র কণিকা প্রতি ঘনমিটারে ১৮৭ মাইক্রোগ্রাম

বিশ্বে সবচেয়ে বায়ুদূষণের কবলে থাকা শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা শহরের অবস্থান ১৭তম। আর রাজধানী শহরগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। এই শহরের বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তু কণিকার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম ২.৫) পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেওয়া মাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান এয়ারভিজ্যুয়ালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘বিশ্ব বাতাসের মান প্রতিবেদন ২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে থাকা শহরগুলোর তালিকাটি এয়ারভিজ্যুয়ালের ওয়েবসাইটে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়। বিশ্বের ৭৩টি দেশের বায়ুর মানের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার আয়তনে বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তু কণিকার পরিমাণ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

তালিকায় দেখা যায়, সবচেয়ে বায়ুদূষণের কবলে থাকা রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরের তালিকায় প্রথম ২০টির মধ্যে ১৫টিই ভারতের। বাকি পাঁচটির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, পাকিস্তানের ফয়সালাবাদ ও লাহোর এবং চীনের হোতান ও কাশগর। তালিকায় এমন শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ভারতের গুরুগ্রাম।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, বায়ুদূষণে বিশ্বের ৭৩টি দেশের বিভিন্ন শহরের ২০১৮ সালের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ১৭তম হলেও রাজধানী শহরগুলোর তালিকায় এই শহরের অবস্থান দ্বিতীয়। এ ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে ভারতের নয়াদিল্লি।

গতকাল সন্ধ্যায় এয়ারভিজ্যুয়ালের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, বিশ্বের বড় শহরগুলোর মধ্যে বায়ুদূষণে ঢাকা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ সময় ঢাকার বাতাসে ক্ষুদ্র কণিকার মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১৮৭ মাইক্রোগ্রাম। এই তালিকায় শীর্ষে ছিল মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোর।

ক্ষুদ্র বস্তু কণিকার আকার ২ দশমিক ৫ মাইক্রন বা মাইক্রোমিটার। মানুষের চুলের সঙ্গে তুলনা করলেই এই আকার সম্পর্কে সহজে ধারণা পাওয়া যায়। চুলের ব্যাস গড়ে ৬০ মাইক্রোমিটার হয়ে থাকে। অর্থাৎ একটি চুলকে চিরে ২৪ ভাগ করলে যে ব্যাস পাওয়া যাবে, ক্ষুদ্র কণিকার আকার তার সমান। অত্যন্ত ক্ষুদ্র হওয়ায় এসব কণিকা খুব সহজেই মানুষের শ্বাসতন্ত্রে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে পুরো শরীরে ছড়িয়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি করে। আন্তর্জাতিক বেসরকারি পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের এক হিসাবে জানা গেছে, বায়ুদূষণের কারণে আগামী বছর বিশ্বজুড়ে ৭০ লাখ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ক্ষতি হবে প্রায় ২২ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার।

স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাতাসে ক্ষুদ্র কণিকার গড় মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ১০ মাইক্রোগ্রাম বেঁধে দিয়েছে। অথচ ঢাকার বাতাসে এই কণিকার মাত্রা ২০১৮ সালে ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৯৭ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম। ২০১৭ সালে এই মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৭৯ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ ওই বছরের তুলনায় গত বছর ঢাকার বাতাস আরও অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে।