দেশে খাদ্য নিরাপত্তার মান এখনও নিম্ন পর্যায়ে

0
721
blank
blank

আলাউদ্দিন চৌধুরী: দেশে খাদ্য নিরাপত্তার মান এখনও নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সেইসাথে এর অবস্থাকে অস্থিতিশীলও উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এশিয়ার খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টির ধারাবাহিক উন্নতি হয়নি।

কখনও কখনও এই পরিস্থিতি পেছনের দিকেও হেঁটেছে। বাংলাদেশের খাদ্যের মূল্য খুব বেশি উঠানামা করে। দেশে এখনও শিশুদের পুষ্টি, খর্বাকায় পরিস্থিতি এবং পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের কম ওজন সমস্যা উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে।

খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার জন্য প্রতিবেদনে সময় ভিত্তিক খাদ্য উত্পাদনের তথ্য, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এখনও পুষ্টির বিষয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তাছাড়া দুর্নীতি, সুশাসনের অভাব, রাজনৈতিক সহিংসতার সময়কালেও খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। বিগত সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা কিভাবে খাদ্য নিরাপত্তাকে বাধাগ্রস্ত করেছে সেটিও তুলে ধরা হয়েছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভূমি ক্ষয়, অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ, ভূগর্ভস্থ পানি দূষণ প্রভৃতি খাদ্য নিরাপত্তায় বাধা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এডিবি বিভিন্ন দেশের দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে উল্লেখ করেছে, যে দেশ যত দুর্নীতিগ্রস্ত সেদেশের খাদ্য নিরাপত্তা তত ঝুঁকিতে থাকে।

২০১৪ পর্যন্ত সময় ভিত্তিক খাদ্য উত্পাদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ধান উত্পাদনে প্রায় স্বয়ংস্পূর্ণ (৯৯%)। কিন্তু অন্যান্য খাদ্য উত্পাদনে পিছিয়ে রয়েছে। দেশের চাহিদার তুলনায় গম ২৭ ভাগ, ভুট্টা ৬৮ ভাগ এবং সয়াবিন উত্পাদন হচ্ছে মাত্র ৪৬ ভাগ। বাকিটা আমদানি নির্ভর। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম এবং ডাল হলো আমিষের মূল উত্স। ২০১৫ সালের বিশ্ব খাদ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী বছরে মাথাপিছু মাত্র দশমিক ২৫ মেট্রিক টন ডাল উত্পাদন হয় যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। দেশে গড়ে মাথাপিছু বছরে দশমিক ৮ টন ডাল আমদানি করতে হচ্ছে। দেশে প্রাণীজ আমিষ গ্রহণের হারও অনেক কম। পুষ্টি পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে উল্লেখ করা হয়েছে, গর্ভবতী নারীদের রক্ত স্বল্পতার হার ২০১০ সালে ৪৮ শতাংশ ছিল যা ১০১৫ সালেও কোন পরিবর্তন হয়নি। ৫ বছরের নিচে শিশুদের এ সমস্যা প্রায় ৫৬ ভাগ।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ইসরাইল, জাপান, কোরিয়া, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুরের খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির তুলনামূলক তথ্য সন্নিবেশন করা হয়েছে।