দ.সুনামগঞ্জ আ.লীগের সম্মেলন: হাসনাত সাধারণ সম্পাদক পদে অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী

0
760
blank
blank

সুনামগঞ্জ: দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের ব্যক্তিগত সহকারি হাসনাত হোসেন এখন এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী নাম। সাংগঠনিক প্রজ্ঞায় গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন – তাকে তৃণমূলে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক মহল। তাই আসন্ন সম্মেলনে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এই উদীয়মান নেতাকেই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিবেচনা করছেন। এ নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগে আলোচনাও চলছে।
নেতাকর্মীরা জানান, ভদ্র, নম্র ও বিনয়ী হাসনাত হোসেন পারিবারিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক আবহে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের এক সাহসী প্রতিনিধি। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার পিতা হাজী মকবুল হোসেন ও দাদা মফিজুল্লাহ তালুকদারকে নির্যাতন করেছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। জ্বালিয়ে দিয়েছিল তাদের বাড়িঘর। তার বাবাকে ধরে নিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যার উদ্যোগ নিয়েছিল মিলিশিয়া বাহিনী। পরে চরম নির্যাতন করে ছেড়ে দিয়েছিল। দাদা পানিতে ঝাঁপ দিয়ে রাজাকারদের হাত থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পরপর তার বাবা ও দাদাসহ মুক্তিযোদ্ধা-জনতা রাজাকার আব্দুস সাত্তারকে শায়েস্তা করার ঘটনায় ছিলেন অগ্রপথিক। এছাড়াও আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রতিটি নির্বাচনেই তার পরিবার এলাকায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।
হাসনাত নিজেও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে নৌকার পক্ষে বুদ্ধিদীপ্ত সাংগঠনিক প্রজ্ঞা দেখিয়ে অনেকের দৃষ্টি কেড়েছেন। নৌকার পক্ষে আন্তরিকভাবে কাজ করায় তৃণমূল আওয়ামী লীগে তখন থেকেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তার ছোট ভাই প্রভাষক নূর হোসেন ছিলেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক। বর্তমানে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার আরেক ছোট ভাই মনোয়ার হোসেন জেলা ছাত্রলীগের আগের কমিটির সম্পাদকীয় পদে ছিলেন। এভাবে তার পুরো পরিবারই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ লালন করে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চর্চা করছে। জানা গেছে, আসন্ন সম্মেলনে নেতৃত্বের প্রশ্নে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় স্থানীয় রাজনীতির একটি দুষ্ট চক্র তাকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ওই চক্র যে সময়ের কথা উল্লেখ করে তার রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে অপপ্রচার করছে তখন তিনি সদ্য কলেজে পা রাখা এক কিশোর। এসবের ধারধারি ছিলেন না তিনি। নেতাকর্মীরা জানান, সারাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শীর্ষ নেতা-এমপি’র অনেক ব্যক্তিগত সহকারির বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম, অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। কিন্তু হাসনাত হোসেন দীর্ঘদিন মন্ত্রীর সান্নিধ্যে থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করছেন। তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের কোনো অভিযোগ করতে পারেনি। সততা ও নিষ্ঠায় এখনো তিনি কাজ করছেন বলে নেতাকর্মীরা জানান।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, একযুগেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী হাসনাত হোসেন। প্রতিদিনই তার বুদ্ধিদীপ্ত সাংগঠনিক তৎপরতা আমাদের মুগ্ধ করছে। একবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও রাজপথে জামায়াত-বিএনপি’র ষড়যন্ত্র-অপপ্রচার রুখতে হাসনাতের মতো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আদর্শবান তরুণ নেতার প্রয়োজন।
হাসনাত হোসেন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আমার দাদা-বাবা পাঞ্জাবীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। আমাদের বাড়িঘর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমার পুরো পরিবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি চর্চা করছে। আমি তৃণমূল আওয়ামী লীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করতে চাই। জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করায় জামায়াত-বিএনপি চক্র এখন নানা ষড়যন্ত্র করছে।