নিউইয়র্কে জালালাবাদ সেন্টারের স্বপ্নযাত্রা শুরু

0
544
blank

রশীদ আহমদ নিউইয়র্ক থেকে:  ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে যাত্রা শুরু করা বৃহত্তর সিলেটের মানুষের আম্ব্রেলাখ্যাত  সংগঠন জালালবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ৪৫ বছর পর আরো একটি স্বপ্ন যাত্রা শুরু করেছে। এ স্বপ্ন যাত্রা নিউইয়র্কের মাটিতে একটি নিজস্ব সেন্টার স্হাপনের। যেটির নাম হবে জালাবাদ সেন্টার। এ সেন্টারসহ নানাবিধ কার্যক্রম সফল করতে ৬ ডিসেম্বর রোববার সিটির উডসাইড গুলশান টেরেসে আয়োজন করা হয়েছিল ফান্ড রেইজিং-এর। উৎসবমুখর পরিবেশে এদিন সন্ধ্যায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানটি রাত গড়াতেই পরিণত হয় সংগঠনের নেতা-কর্মী ও পরিবারের সদস্যদের মিলন মেলায়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কেপিসি গ্রুপের  সিইও ডা. কালি প্রদীপ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে নগদ আর চেকের মাধ্যমে ২৫,৫০০ ডলার ছাড়াও এক লক্ষ পাঁচ হাজার ডলার সংগ্রহের কমিটমেন্ট পাওয়া যায়।

সংগঠনের সভাপতি বদরুল হোসেন খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ফান্ড রেইজিংয়ের ঘোষণা আসে মঞ্চ থেকে। পাঁচ ক্যাটাগরিতে ফান্ড রাইজিং চলে। এর মধ্যে যারা ১০ হাজার ডলার দিয়েছেন তারা পেট্রোন, পাঁচ হাজার ডলার গোল্ড, এক হাজার ডলার সিলভার, ৫০০ ডলার ফাউন্ডার মেম্বার  ও ২০০ ডলার সাপোর্টার। অনুষ্ঠানে ফাতেমা গ্রুপের  চেয়ারম্যান হাজী শামসুল ইলসাম, মতিন গ্রুপের  স্বত্বাধীকারি আবুল কালাম মতিন, দুবাই থেকে মোস্তফা কামাল, জহিরুল এস আলম, জয়নাল গ্রুপের  স্বত্বাধীকারি জয়নাল আবেদীন, বদরুল হক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফান্ড রেইজিং পেট্রন হিসেবে নাম ঘোষণা করে তাদের পরিচয় করে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানানো হয়। পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও সংগঠনের সাবেক এবং বর্তমান শীর্ষ কর্মকর্তাদের মঞ্চে ডেকে পূনরায় পরিচয় করে দেয়া হয় তাদের।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফান্ড রেইজিং কমিটির আহবায়ক মিজানুর রহমান চৌধুীর শেফাজ ও সদস্য সচিব মো: ফখর উদ্দিন আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানান।  

অনুষ্ঠানে ডা. কালী পদ্ধদীপ চৌধুীরী ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট রাজনীতিক এম এ সালাম, ফপ্টা রেইজিং পেট্রন যথাক্রমে হাজী শামসুল ইলসাম, আবুল কালাম মতিন, মোস্তফা কামাল, জহিরুল এস আলম, জয়নাল আবেদিন, বদরুল হক, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক  আব্দুর রহীম হাওলাদার, অনুষ্ঠানের স্পন্সর টিবিএন-এর সিইও আহমেদুল বড় ভূঁইয়া, ওয়েলকেয়ারের সিনিয়র ম্যানেজার সালেহ আহমেদ, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক  লোকমান হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আতাউল গণি আসাদ, পদ্ধমুখ।

অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে চলে সাংস্কৃতিক বিনোদন। এতে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শান্ত নীল ধর ও সেজুতি গান পরিবেশন করেন। এর মধ্যে সেজুতির ‘ভ্রমার কইও গিয়া‘ রাধা রমনের বিখ্যাত গান ও শান্ত নীল ধরের বেশক‘টি সিলেটি আঞ্চলিক গান পরিবেশন করে উপস্থিত  সবাইকে সিলেটের শেকড়ে ফিরিয়ে নিয়ে যান। নৃত্য পরিবেশন করেন প্রবাসে বাংলা সংস্কৃতির প্রসার ও অনুশীলন কেন্দ্র বিপা‘র তানিজল নেওয়াজ, আফিয়া জাহান পন্নি, নামিয়া, জেরিন আইরিন। এছাড়া দুই জন স্হপতি লাইলা ফারজানা ও মাহফিল আীল পরিকল্পিত জালালবাদ সেন্টারের ডকুমেন্টরি পদ্ধদর্শন করেন। পদ্ধস্তাবিত জালালাবাদ সেন্টারটি কি ধরনের হবে এবং কি কি ব্যবস্থা থাকবে তাও পদ্ধদর্শন করা হয়। ডকুমেন্টারিতে ইতালি, স্পেনিশ ও আইরিশদের স্বেচ্ছাসেবকমূলক কার্যক্রমের আদলে সেন্টার পরিচালনার পরিকল্পনা স্থান পায়।

অনুষ্ঠানে ডা. কালীপদীপ চৌধুীর বলেন, আমি একা যদি ১৩০ তলা ভবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারি, তাহলে সিলেটিরা কেন একটি ভবন বানাতে পারবে না। আমরা সবাই চেষ্টা করলে অবশ্যই নিউইয়র্কে জালালাবাদ সেন্টার হবে। তবে এটা একদিনে হবে না। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। এটি আমাদের সধ§ান, মর্যাদার বিষয়। এজন্য ব্যক্তিগতভাবে আমার সর্বাত্বক সহযোগিতা থাকবে।

বদরুল হোসেন খান বলেন, নিউইয়র্কে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নিজস্ব সেন্টার পদ্ধতিষ্ঠা আমাদের স্বপ্ন। সবার সহযোগিতায় এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, জালালাবাদ সেন্টার প্রতিষ্ঠায় প্রথম  উদ্ধুদ্ধ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্হায়ী প্রতিনিধি ড. আব্দুল মোমেন। তিনিই আমাদের পথ দেখিয়েছেন। তার পথ ধরে যতই এগিয়ে যা”িছ, সেখানেই গেছি, সেখানেই সবার সহযোগিতা পাচ্ছি।

জুয়েল চৌধুীর তার বক্তব্যে অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য সংশ্লিস্ট সকলের পদ্ধতি কৃতজ্ঞতা পদ্ধকাশ ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হলে অবশ্যই জালালাবাদ সেন্টার পদ্ধতিষ্ঠা হবে। এসময় তিনি জালালাবাদ সেন্টার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা স্ববিস্তারে তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, দি অপটিমিস্টের সাবেক চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন চৌধুীর রানা ও ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বদরুন্নাহার খান মিতা, বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর মো: আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতির সাবেক সভাপতি বুরহান উদ্দিন কফিল, মূলধারার রাজনীতিক আব্দুস শহীদ, বিশিষ্ট ব্যবসাীয় হাীজ আব্দুল মান্নান, বিশিষ্ট রাজনীতিক শাহীন আজমল, মিসবাহ আহমেদ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট দেওয়ান বজলু, বাংলাদেশী-আমেরিকান কালচারাল  এসোসিয়েশন-এর সভাপতি ও জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ডের সাবেক সদস্য হাজী আব্দুল হাসিম হাসনু, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য একলিমুজ্জামান নুনু ও মোবাশ্বের হোসেন চৌধুরী, ট্রাষ্টি বোর্ডের সাবেক সদস্য আবুল কালাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুনেদ এ খান ও আহমেদ জিল্লু, সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, তরুণ সংগঠক আহবাব হোসেন চৌধুরী খোকন, হিউম্যানিটি ক্লাব অফ আমেরিকা ইনক’র প্রেসিডেন্ট মাওলানা রশীদ আহমদ, ব্রঙ্কস কমিউনিটি নেতা মঞ্জুর চৌধুরী, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক কর্মকর্তা মাওলানা ছয়ফুল আলম সিদ্দিকী, এডভোকেট নাসির উদ্দিন আহমেদ, খয়রুজ্জামান খয়রু, মির্জা মামুন, হেলিম উদ্দিন, এম এ করীম, সৈয়দ জুয়েল, এবাদ চৌধুরী, জোসেফ চৌধুরী, দরুদ মিয়া রনেল, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট সৈয়দ আতিক, শেখ আতিক, মনসুর চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাওসারুজ্জামান কয়েস, বাসির খান, জুবায়ের চৌধুরী শাহীন, সৈয়দ নজমুল হাসান কোবাদ, শফি উদ্দিন তালুকদার, মহীদুল হক আবদাল, তাজ উদ্দিন, সালেহ গণি, মো: ফকর উদ্দিন, মজিবুর রহমান চৌধুরী শাহজাহান, আব্দুর রহিম, আব্দুর রউফ মসলু, জামাল হোসেন, সেবুল মিয়া, সালেহা খাতুন, সালমা শবনম চৌধুরী, সুমাইয়া বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে সহ সভাপতি মোশাররফ আলম, সাব্বির হোসেন ও আনোয়ার চৌধুরী পারেক, প্রচার সম্পাদক আশফাক চৌধুরী জামি, ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুল মতিন, কার্যকরী সদস্য জ্যোতির্ময় দত্ত, আকবর হোসেন সরপন উপস্থিত  ছিলেন।  

উল্লেখ্য, ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানে বক্তৃতার পর্ব সংক্ষিপ্ত করায় উপস্থিত  দর্শক-শ্রোতারা আয়োজকদের প্রশংসা করেন। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থিত  সকলকে মুগ্ধ করে।