নিজস্ব ক্যাম্পাসে না গেলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ

0
566
blank

যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও নিজস্ব ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি এবং একাধিক ক্যাম্পাসে পাঠদান পরিচালনা করছে সেসব প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।blank

শনিবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর ভাটারা থানাধীন মাদীনী এভিনউয়ে নিজস্ব ক্যাম্পাসে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা একান্তই নিজেরা কোনো অসৎ উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে চান, আইন-বিধিমালা মানতে চান না, তাদের সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে পারবো না, তাদের আইনি পথে বাতিল করতে বাধ্য হবো।

‘এ রকম কিছু বিশ্ববিদ্যালয় উতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা আশা করি যারা আন্তরিক তারা সহযোগিতা করবেন, না হলে আমাদের কোনো বিকল্প থাকবে না।’

যে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সফল হতে পারেনি, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার পরিবেশ ও নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যারা মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে চলতে চান- তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন নাহিদ।

তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ব্যর্থ হতেও দেবেন না শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ব্যর্থ হতে দিতে চাই না। সেগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা তাদের সফল করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপন করায় খুশি হয়ে নাহিদ বলেন, অদূর ভবিষতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও তাদের সমাবর্তন নিজস্ব ক্যাম্পাসে করবে।

দেশের বাস্তবতা এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে টিউশন ফি নির্ধারণের আহ্বানও জানান নাহিদ।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য বিষয় বাছাই, শিক্ষাক্রম উন্নয়ন, শিক্ষাদানের পদ্ধতি আধুনিকায়নের উপর জোর দেন শিক্ষামন্ত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর এবং রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বি করেন শিক্ষামন্ত্রী।

সমাবর্তনে এক হাজার ৬১০ জন শিক্ষার্থীকে গ্রাজুয়েশন ও পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি এবং কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ছয়জনকে স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

ডিগ্রি প্রাপ্তদের দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান নাহিদ।

‘অপনারাই হবেন দেশের ভবিষৎ নেতা, রাজনীত, অর্থনীতি-বাণিজ্য-শিক্ষা-বিজ্ঞান-গবেষণায় নেতৃত্ব দেবেন। আপনারা হবেন দেশ ও জাতি গঠনের শ্রেষ্ঠ কারিগর।’

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান সমাবর্তনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজারমুখী বিষয় খোলার লক্ষ্য হওয়া উচিৎ নয়। জ্ঞান প্রসারে গবেষণায় মনোনিবেশ করতে হবে।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা ধরনের ছলচাতুরি করে। শিক্ষার্থীদের কাছে উচ্চহারে বেতন নেয়, অথচ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেয় না। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সমাবর্তন বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, অর্জিত জ্ঞান শুধুমাত্র সনদ লাভের উদ্দেশে সীমাবদ্ধ না রেখে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত করতে হবে। আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তিতে জ্ঞান আহরণ করার আহ্বান জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা, ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম. জিওয়ান খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।