নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে যুব বিশ্বকাপে আসছে না অস্ট্রেলিয়া

0
483
blank
blank

ঢাকা: নিরাপত্তা হুমকির কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশে আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে আসছে না অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দল। গতকাল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড বলেন, ‘অস্ট্রেলীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুব বিশ্বকাপ থেকে নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে।’ এর আগে নিরাপত্তার একই কারণ দেখিয়ে গত অক্টোবরে বাংলাদেশে নির্ধারিত টেস্ট-সফর স্থগিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এই মাসেই ২৭ তারিখ থেকে যুব বিশ্বকাপের আসর শুরু হওয়ার কথা। এরই মধ্যে  ভেনুও ও সূচি ঘোষণাও করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তবে গতকাল আইসিসি’র নিয়ম অনুসারে ক্রিকেটার তালিকা প্রকাশের শেষদিন বিশ্বকাপের আসর থেকে নিজেদের প্রত্যহার করে দেশটি। বাংলাদেশ সরকার, আইসিসি ও বিসিবি সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা বললেও অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের উপর হামলা হওয়ার তথ্য আছে তাদের হাতে। এই বিষয়ে সাদারল্যান্ড বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জেনেছি বাংলাদেশের মাটিতে অস্ট্রেলীয়দের নিরাপত্তা যথেষ্ট হুমকির মুখে। আমরা মনে করেছি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যুব বিশ্বকাপ থেকে দল প্রতা্যাহার করে নেয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো দরজা খোলা নেই।’
অন্যদিকে আইসিসি যুব বিশ্বকাপের সব নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদের বলে ঘোষণা দিয়েছে। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার পরিবর্তে আয়ারল্যান্ডকে খেলার জন্যও আমন্ত্রণ জানিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে অস্ট্রেলিয়ার মতো একটি বৃহৎ শক্তির দেশ বারবার এই দেশের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সফর বাতিল করাকে অনেকেই অশনি সঙ্কেত হিসেবেই দেখছেন।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তকে আবারও দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী (সিইও) নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। তবে অস্ট্রেলিয়াকে ছাড়াই আসর সফলভাবে সম্পন্ন করার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটা খুব হতাশা ও দুঃখজনক। একটা অংশগ্রহণকারী দেশ (অস্ট্রেলিয়া) আইসিসি’র ইভেন্টে অংশগ্রহণ না করার ব্যাপারে জানিয়েছে। এখনও আমরা আশাবাদী, যে ইভেন্টটা নিয়ে আমরা এগুচ্ছি সেটা সফলভাবে শেষ করতে পারবো।’ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের করণীয় নিয়ে সিইও বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, এটি হচ্ছে আইসিসি’র ইভেন্ট। অংশগ্রহণকারী দেশ যারা থাকে তাদের কোনো কথা থাকলে আইসিসিতে যোগাযোগ করে। এটাই হচ্ছে নিয়ম।  আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছি। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ লেভেল থেকে এ টুর্নামেন্টের ব্যাপারে সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের দিক থেকে যতটুকু করার করেছি। টুর্নামেন্টটা সফলভাবে করাই হচ্ছে আমাদের দায়িত্ব, স্বাগতিক দেশের চুক্তি হিসেবে।’
কিছুদিন আগেই যুব বিশ্বকাপকে সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শন ক্যারল বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এসেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। অস্ট্রেলিয়া ফিরে গিয়ে তার এ ব্যাপারে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল। তাই সবকিছু বিচার-বিবেচনা করেই বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাদারল্যান্ড। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির ব্যাপারে আইসিসি’র নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে কাজ করেছি। দলের খেলোয়াড় এবং তাদের অভিভাবকদেরও বাংলাদেশের ব্যাপারে সর্বশেষ জানিয়ে এসেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে- অস্ট্রেলীয় সরকার আমাদের জানিয়েছে, বাংলাদেশে অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের ওপর নিরাপত্তার হুমকি আগের মতোই আছে।’ তবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে খেলার বিষয়ে আগের মতোই আশা প্রকাশ করে সাদারল্যান্ড বলেন, ‘এ ব্যাপারে সামনের দিনগুলোতে বিসিবি’র সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাব।’ এছাড়াও যুব বিশ্বকাপ থেকে নাম প্রত্যাহার অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ক্রিকেটারদের ওপরও প্রভাব ফেলবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। সাদারল্যান্ড বলেন, ‘আমাদের তরুণ ক্রিকেটাররা আগ্রহভরে এই আসরে  অপেক্ষায় ছিল। নাম প্রত্যাহার করে নেয়ার এই সিদ্ধান্ত তাদেরও যথেষ্ট হতাশ করবে।’