নির্বাচনকালীন সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হতে হবে: মির্জা ফখরুল

0
415
blank

ঢাকা: রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ‘শক্তিশালী’ নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু নির্বাচন কমিশন শক্ত হলে বা শুধু নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হলেই হবে না, নির্বাচনকালীন যে সরকারটা থাকবে তাকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হতে হবে। তার মাথায় থাকতে হবে যে, আমি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নিরপেক্ষ ইনক্লুসিভ ইলেকশন করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে- এ ধরনের একটা সরকার গঠন করতে সাহায্য করবো।
একটি সহায়ক সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে এবং সকল দলের কাছে গ্রহণযোগ্য ও ইনক্লুসিভ হতে হবে সেই নির্বাচন- এটাই হচ্ছে মূল কথা।
এর বাইরে এদেশের মানুষ অন্যকিছু মেনে নেবে না। গায়ের জোরে-বন্দুকের জোরে অনেক কিছু করা যায়, কিন্তু মন তো নেয়া যায় না। এদেশের মানুষ অন্যায়ের কাছে কখনো মাথা নত করে নাই। শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা মহানগরের উদ্যোগে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাধারণ মানুষ বলছে কী হবে? ওই যা ঠিক করে রেখেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেটাই হবে। আমরাও দেখতে চাই আসলে উনি (রাষ্ট্রপতি) জনগনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারছেন কিনা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই দীর্ঘ-অভিজ্ঞ রাজনীতিক আজকে যে জায়গায় আছেন, তিনি এই জাতিকে এই সংকট থেকে মুক্ত করতে পারেন। তিনি একটি নির্বাচন কমিশন দেবেন, যে কমিশন অন্ততঃ শক্তিশালী হয়ে দাঁড়াতে পারে।
যদি না পারেন ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায়ে তাদের নাম লিখিত হবে এবং ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে তারা ব্যর্থ হবেন। আর যদি পারেন ইতিহাসে সবচাইতে স্বর্ণখচিত জায়গায় নাম লেখা থাকবে।
মির্জা ফখরুল ভোটের অধিকার ফিরে পাবার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানিয়ে বলেন, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ভোটের অধিকার ফিরে পাবার জন্য, আমাদের অধিকার ফিরে পাবার জন্য। আমরা আশা করবো, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তারা জনগনের এই দাবি, জনগনের ইচ্ছা, জনগনের আশা-আকাংখা তারা বুঝবেন। সঠিক পদক্ষেপ নেবেন।
সার্চ কমিটি সম্পর্কে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সার্চ কমিটি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আমরা দেখেছি যে, সার্চ কমিটির মধ্যেও সরকারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত এবং সরকারের বেনিফিটপ্রাপ্ত লোকজন রয়েছেন। সরকারি কাজেরত সেই ধরণের লোকজনও রয়েছে। তারা নিরপেক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন বলে আমরা মনে করি না।
তারপরও আমরা মেনে নিয়েছি। আমাদের কাছে নাম চাওয়া হয়েছিল, আমরা নাম দিয়েছি। একটি মাত্র কারণে- আমরা গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে কোনো রকম সংঘাত ছাড়া, কোনো অনিশ্চয়তা-অস্থিতিশীলতা ছাড়া আমরা গণতন্ত্রকে সুসংহত দেখতে চাই।
সংকট উত্তরণে সংলাপের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনীতিতে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেই সংকট দূর করে আমরা একটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু জায়গায় ফিরে আসতে চাই। কিন্তু কে শুনাবে? কার কানে গিয়ে পৌঁছাবে এই বাণী। ওই যে তোমরা যে যা বলো ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই। তাদের তো সোনার হরিণ ওই ক্ষমতার মসনদ দরকার। সেই মসনদের জন্য অন্য কে কি বললো, তাতে কিছু যায় আসে না।
মহানগর জাগপার সভাপতি আসাদুর রহমান খাঁনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় জাগপা‘র সহসভাপতি রেহানা প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার লুৎফর রহমান, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।