নির্বাচনে যারা জেতাবে তাদের জন্য কাজ করছে সরকার: খালেদা জিয়া

0
580
blank
blank

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাসীন দল আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতে যারা সহযোগিতা করবে, তাদর জন্য কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপার্সন মঙ্গলবার রাজধানীতে এক ইফতার মাহফিলে বলেন, নির্বাচনে জেতা যাদের নিয়ে সম্ভব, যারা তাদের জিতিয়ে দিতে পারবেন, তাদের জন্য কাজ করছে সরকার। সাধারণ মানুষের এখানে ভোটের কোনো দাম নেই্। সেজন্য আমাদের দাবি দেশে ভোট হতে হবে, গত ১০ বছর দেশে ভোট হয়নি। গুলশানের ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে ২০ দলীয় জোটের শরিক লেবার পার্টির উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল হয়।

একাদশ নির্বাচনে সকলের অংশ গ্রহণের কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, সকল রাজণৈতিক দল যাতে ভোটে অংশ গ্রহণ করতে পারে, সেজন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আর ভোটটা যাতে সকল মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেই ব্যবস্থা রাখার জন্য প্রয়োজন একটা নির্বাচনকালীন সরকার। যে সরকারটা সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারবে নির্বাচন কমিশনকে।

তিনি বলেন, কারণ হাসিনা সরকার তারা কিছু করবে না, তাদের প্রক্রিয়া ভিন্ন। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে চায় না। সেজন্য দেখেন, আজকে জনগণের এতো দুঃখ-দুর্দশায় তাদের কোনো চিন্তা নেই।

সড়ক-মহাসড়কের বেহাল অবস্থায় বর্তমান সরকারের আমলে সারাদেশে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, সারাদেশেই এখন দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। বিশেষ করে হাইওয়ের যে বেহাল অবস্থা, রাস্তা ছবি পত্র-পত্রিকায় আপনারা দেখেছেন। হাইওয়ের যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়বে। এই সরকারের আমলেই আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি মৃত্যু আর মৃত্যু, মৃত্যুর মিছিল বেড়ে চলেছে।

তিনি বলেন, অথচ এই সরকার মহা আনন্দে আছে। তারা দেশে বিদেশে ভ্রমণ করে বেড়াচ্ছেন, তারা আকাশে উড়েন, তারা মাটির কথা চিন্তাও করেন না, মাটির দিকে দেখেনও না, কী অবস্থায় আছে দেশ?

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, তারা (সরকার) অনেক উন্নয়নের কথা বলেন। কিন্তু রাস্তা-ঘাটের যে অবস্থা, গ্রামে-গঞ্জের রাস্তা-ঘাটের যে অবস্থা, সেটা দেখে কী বুঝা যায় উন্নয়ন হয়েছে দেশে? উন্নয়নের সুফল কী দেশের মানুষের কাছে পৌঁছেছে? যদি উন্নয়নের সুফল পৌঁছাতো তাহলে দেশের মানুষ দুই বেলা পেট ভরে খেতো, ভালোভাবে থাকতো, শান্তিতে থাকতো, আনন্দে থাকতো।

পাবর্ত্য অঞ্চলে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে আহতদের অবিলম্বে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানান খালেদা জিয়া।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম কী দেশের এই অবস্থা দেখতে। এক পরিবার সমস্ত কিছু দখল করে নেবে, কেউ গণভবন দখল করে নেবে, অমুক বাড়ি দখল করবে, তমুক করবে। তাদের সব নিরাপত্তা দিতে হবে। শুধু তারাই নিরাপত্তা পাবে, সাধারণ মানুষের কোনো নিরাপত্তা নাই। গুম-খুন হচ্ছে, যাকে তাকে গুম করে নিয়ে যাচ্ছে। আজকে মানুষ পরিবর্তন চায়, এদেশের মানুষ আজকে জালেমদের কাছ থেকে মুক্তি চায়। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান তিনি।

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহসহ জোট নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া।

ইফতারে জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ, কল্যাণ পাটির্র সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জাতীয় পাটির্র (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের মাওলানা আবদুল হালিম, জাগপার রেহানা প্রধান, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মূর্তজা, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, বিজেপির আবদুল মতিন সউদ, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, খেলাফত মজলিশের শেখ গোলাম আজগর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, শাহজাহান ওমর, মীর মো. নাসির, রুহুল খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নাল আবেদীন, রুহুল আলম চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাবিথ আউয়াল, রফিক শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।