নির্বাচন বর্জন নয়, কেন্দ্র পাহারা দিন: ড. কামাল

0
512
blank

স্টাফ রিপোর্টার: সরকার ক্ষমতায় থেকে যত ধরনের ১০ নম্বরি করুক ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বয়কট করবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। বলেছেন, একবার নির্বাচন বয়কট করে তার খেসারত দিতে হয়েছে, এবার আমরা বয়কট করবো না। গতকাল বিকালে রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট বার প্রাঙ্গণে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত আইনজীবী মহাসমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন। কামাল হোসেন বলেন, আমরা ভোট করবো। ভোট কেন্দ্র পাহারা দিয়ে ভোট করবো। হাজারে হাজারে গিয়ে ভোট দেবো। তরুণ ভোটারদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দুই কোটি তরুণ ভোটার যারা আছেন সকলে সংঘবদ্ধ হোন। ১৬ কোটি মানুষের অধিকার আমরা ফিরিয়ে দেবো।

ঐক্যফ্রন্টের এই প্রধান নেতা বলেন, এই দেশের মালিক জনগণ। তারা ভোটের মাধ্যমে দেশের শাসনক্ষমতা নির্ধারণ করবে। কিন্তু দেশের মানুষকে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। তখন তারা কোর্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, আমরা পরিস্থিতির আলোকে এই নির্বাচন করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আরেকটি নির্বাচন দেবো। এরপর ৫ বছর পেরিয়ে গেল। দ্রুত নির্বাচন করার অর্থ যে ৫ বছর তা আমরা জানতাম না। ডিকশনারিতে কি বাংলা ভাষায় নতুন করে দ্রুত মানে ৫ বছর যুক্ত হয়েছে? এ সময় মহাজোট সরকারকে ‘ভাঁওতাবাজির সরকার’ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ভাঁওতাবাজির জন্য কোনো গোল্ড মেডেল হলে সেটা এই সরকারকে দেয়া উচিত। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার ভাঁওতাবাজি করে ৫ বছর কাটিয়ে দিলো।

আমরা চেয়ে চেয়ে দেখলাম। আমার কাছে ভাবতেই অবাক লাগে কিভাবে ৫ বছর মেনে নিলাম। ড. কামাল বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের অপমান করেছে। তারা হয়তো মনে মনে বলে- শহীদরা ১৬ কোটি মানুষের হাতে ক্ষমতা দিয়ে গিয়েছিলে। এখন দেখো আমরা কিভাবে চালাচ্ছি। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা রায় দেয়ার পর সম্ভবত একজন মন্ত্রী বলেছিলেন- তোকে কে নিয়োগ দিয়েছে? একজন প্রধান বিচারপতিকে এভাবে কেউ বলতে পারে না। এটা নিয়ে এখনো মামলা হতে পারে। আপনারা কেউ এটা নিয়ে মামলা করেন। আমি লড়বো সেই কেইস। ড. কামাল বলেন, সরকার কথায় কথায় সংবিধান সংবিধান করে। সংবিধানের প্রথম লাইনে লেখা আছে সংবিধান। আমার মনে হয় সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা এই লাইন ছাড়া আর কিছু পড়ে না। কারণ তারা সকাল থেকে শুরু করে পরদিন পর্যন্ত সংবিধান লঙ্ঘন করেন। এভাবে ৫ বছর সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তিনি বলেন, পৃথিবীতে প্রথম ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হয়েছেন। এটা সংবিধান সম্মত নয়। এরা লজ্জাহীন তাই নিজেদের এমপি পরিচয় দেন। এদের লজ্জাবোধ থাকা উচিত। কারণ মানুষের সন্তানদের লজ্জা থাকে।

আল্লাহর কাছে একটা দোয়া করবো। তাদের যেন একটু লজ্জাবোধ দেন। আদমের সন্তানদের পৃথিবীতে পাঠানোর পর যে কয়েকটি বোধ দেয়া হয় তার মধ্যে লজ্জাবোধ অন্যতম। এ সময় তিনি বর্তমান এমপিদের ব্যঙ্গ করে বলেন- এমপি মানে মনোনীত প্রতিনিধি। এটাকে এখন থেকে জিপি বলা উচিত। কারণ জিপি মানে হল ঘোষিত প্রতিনিধি। এমপি হিসেবে ঘোষণার গেজেট প্রকাশেরও সমালোচনা করেন ড. কামাল। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচ করে এসব এমপিদের নামে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। গেজেটে কি কি ছাপা যায় তারও একটা আইন আছে। এই সম্পর্কে বললে হয়তো তারা বলবে আমরা কম জানি নাকি আইন। আমি বলবো- ভাই তোমরা কম জানো না। তবে একটু বেশিই জানো। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে বলেছিলেন সরকার বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করবে। কোনো ফাঁদে পা দেয়া যাবে না।