প্রকল্প বাস্তবায়ন অনিশ্চিত।।শাল্লায় এডিপি’র অংকে গড়মিল

0
517
blank
blank

বিশেষ প্রতিনিধি:

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বিশেষ থোক বরাদ্দ ও এডিপি’র উন্নয়নমূলক কাজে
চলছে দুরাবস্থা এবং টাকার হিসাবেও রয়েছে গড়মিল। জানা যায় এ বছর এডিপি
খাতে ৪টি কিস্তিতে মোট ৫৬লাখ ৬৪হাজার ও বিশেষ থোক বরাদ্দ বাবদ ১টি
কিস্তিতে ২৯লাখ ৫৭ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। অর্থ বছরের এ যাবৎ
শাল্লা উপজেলায় মোট ৮৬লাখ ২১হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য,
সরকার প্রদত্ত এডিপি খাতের বরাদ্দকৃত প্রতিটি কিস্তির অর্থের বিপরীতে
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপজেলা স্ট্যান্ডিং কমিটির মাধ্যমে প্রকল্প বাছাই
কমিটি কর্তৃক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণক্রমে ধাপে ধাপে উন্নয়নমূলক কাজ
বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কমিটি তা না করে সারা
বছরের সমূহ বরাদ্দকৃত অর্থ জড়ো করে জুন ফাইনালকে অতি নিকটে রেখে তড়িগরি
কাজ করার ইতিবৃত্ত পরিলক্ষিত হচ্ছে।
গত ৭ মার্চ দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং- ০২/২০১৬-১৭ মোতাবেক এডিপি’র প্রাপ্ত
বরাদ্দের বিপরীতে ৩৮লাখ ৪০হাজার ২শ’ ৯২টাকা প্রাক্কলিত মূল্যে ক্ষুদ্র
ক্ষুদ্র মোট ২৮টি প্রকল্প উল্লেখ করে দরপত্র আহ্বান করে স্থানীয় সরকার
প্রকৌশল অধিদপ্তর, শাল্লা। ওই বরাদ্দের বিপরীতে পিআইসি মাধ্যম
বাস্তবায়িতব্য আরো ১০টি প্রকল্প গৃহীত হয়। পিআইসি প্রকল্পগুলোতে
প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭লাখ ৬১হাজার টাকা। এডিপি খাতের গৃহীত
প্রকল্প সমূহের প্রাক্কলিত ব্যয় ৫৬লাখ ১হাজার ২শ’ ৯২ টাকা পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায় প্রাক্কলণ বহির্ভূত ৬২হাজার
৭শ’ ৮টাকা অব্যয়িত রয়েছে।
আবার গত ৮ মে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং- ০৩/২০১৬-১৭ মোতাবেক প্রাপ্ত বিশেষ থোক
বরাদ্দের বিপরীতে ২৪লাখ ১৫হাজার ২শ’ ৪টাকা প্রাক্কলিত মূল্যে ৮টি
প্রকল্পে দরপত্র আহ্বান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, শাল্লা।
এখানে ৫লাখ ৪১হাজার ৭শ’ ৯৬ টাকা অব্যয়িত থেকে যায়। হিসেবে দেখা যায় চলতি
অর্থ বছরে এডিপি ও বিশেষ থোক বরাদ্দ খাতে বরাদ্দকৃত মোট ৮৬লাখ ২১হাজার
টাকা মধ্যে ৮০লাখ ১৬হাজার ৪শ’ ৯৬টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় বাদে মোট ৬লাখ
৪হাজার ৫শ’ ৪টাকা অব্যয়িত আছে।
তাছাড়া এলজিইডি, শাল্লার অফিস সহকারী সুধা রঞ্জন দাসের সাথে কথা হলে তিনি
বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের শাল্লায় আগমণ উপলক্ষে জরুরি ভিত্তিতে
পিআইসি’র মাধ্যমে শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় হতে শাল্লা ডিগ্রি কলেজ
পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পে ২লাখ, শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের
খেলার মাঠ ও বিদ্যালয়ের ভিতরের মাঠে বাঁশের নিরাপত্তা বেষ্ঠনী নির্মাণ,
বিয়াম ল্যাব: স্কুলের শ্রেণিকক্ষের সিলিং নির্মাণসহ ৮টি সিলিং ফ্যান ক্রয়
প্রকল্পে ২লাখ ও উপজেলা পরিষদের জন্য ১টি কম্পিউটার ক্রয়সহ বাসভবন মেরামত
কাজে ৯১হাজার ৮শ’ ৩৮টাকা এবং উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে ব্যবহারের জন্য
মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ক্রয় বাবদ ১লাখ ৪২হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এই
ব্যয় সমূহ পূর্ববর্তী প্রাক্কলিত ব্যয়ের সাথে সংযুক্ত করলে মোট
প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়ায় ৮৬লাখ ৫০হাজার ৩শ’ ৩৪টাকা। কিন্তু উপজেলার মোট
বরাদ্দ হচ্ছে ৮৬লাখ ২১হাজার। তবে তিনি এ সংক্রান্ত উপজেলা পরিষদের কোন
সিদ্ধান্ত দেখাননি। পরবর্তীতে একাধিকবার তার অফিসে গিয়েও তাকে না পেয়ে
৮ জুন তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের
শাল্লায় আগমণ উপলক্ষে জরুরি ভিত্তিতে পিআইসি’র মাধ্যমে শাহীদ আলী মডেল
উচ্চ বিদ্যালয় হতে শাল্লা ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পসহ
মোট ৪টি প্রকল্পের কাজ জেলা পরিষদ কর্তৃক করার কথা থাকলেও তা করেননি বলে
জানান।
এবিষয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুটের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে
তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তারা আমাদেরকে চিঠি দেয়ার কথা। কিন্তু আমাদের
কোন চিঠি দেননি। আমরা কিভাবে তাদেরকে বরাদ্দ দেব।
গত বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এডিপি’র গৃহীত প্রকল্প কাজ সমূহ
এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি। তবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নলকূপ স্থাপন কাজের
অগ্রগতি পাওয়া যায়। কিন্তু দেখা যায়, জনপ্রতিনিধিগণ তাদের পছন্দের লোকদের
বাড়ির পেছনে নলকূপ স্থাপন করছেন। যা প্রতিবেশীদের কোনরূপ উপকারে আসবে না
বলে জানান অনেকেই। তাছাড়া এমনই কিছু প্রকল্প নির্ধারণ করা হয়েছে যা
বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
এপ্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের সাথে কথা হলে তিনি
বলেন, যদি সময় মতো কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা না হয়, তাহলে বর্ণিত
অব্যয়িত টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরৎ দেয়া হবে। এবছরের গৃহীত প্রকল্প
সমূহের মধ্যে নিরাপদ পানীয় জলের উৎস হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নলকূপ
স্থাপন কাজে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বহুদিন পূর্ব থেকেই
সরকারি নলকূপ সুবিধাভোগীগণ তারা তাদের ব্যক্তি কাজে ব্যবহার উপযোগি
স্থানেই বসানো হচ্ছে বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হালিম মিঞা’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন,
আমি নতুন এসেছি, এখনো আমার ১মাস হয়নি। আর মাস তিনেক পরেই অবসরে চলে যাব।
তবে সবকিছু মনিটরিং করার জন্য বিশেষ করে চলতি অর্থ বছরের এডিপি খাতে
প্রাপ্ত সমূহ অর্থের বিপরীতে গৃহীত প্রকল্প সমূহের সমন্বিত তালিকাসহ
যাবতীয় ডকুমেন্ট অফিস সহকারি সুধা রঞ্জন দাসের কাছে চেয়েছি, হাতে পেলেই
সবকিছু বলা যাবে।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব সোবহানী চৌধুরী বলেন,
সরকারি নীতিমালায় উপজেলা পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজের প্রকল্প গ্রহণ করতে
হলে তা উপজেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট স্থায়ী (স্ট্যাডিং) কমিটির মাধ্যমে আসার
কথা। কিন্তু এবছর এডিপি খাতের গৃহীত প্রকল্প সমূহ স্ট্যান্ডিং কমিটির
সুপারিশ ছাড়াই তা বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্ত