প্রতারণায় নিঃস্ব ব্যবসায়ী ইমরান সাড়ে ৩ কোটি টাকা ফিরে পেতে চান

0
1308
blank
blank

আলী আসগর ইমন, জগন্নাথপুর: জগন্নাথপুরে জ্বিনের বাদশা সেজে হাফেজ এনামুল হাসানের নেতৃত্বে একটি চক্র মাওলানা ইমরানকে ১৫’শ কোটি টাকা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় জগন্নাথপুর থানায় মামলা হলে পুলিশ প্রতারক চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করলেও হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধারের কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। এদিকে হাতিয়ে নেয়া সাড়ে ৩ কোটি টাকা হজম করতে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নিজেদের মধ্যে টাকার একটি অংশ ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এলাকায়। এমনকি ভাগ বাটোয়ারের সময় একটি ব্যাগে ৪০/৪৫ লাখ টাকার বান্ডিল দেখে ফেলায় মাদ্রাসার এক শিক্ষককে পর্যন্ত চাকুরী হারাতে হয়েছে। সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া জ্বিনের বাদশাসহ কাঁচা টাকা পেয়ে অনেকেই ধনী হয়ে গেছেন। আর সর্বস্ব হারিয়ে মাওলানা ইমরান এখন পথের ফকির হয়ে টাকা ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিচ্ছেন। এলাকাবাসী হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধার এবং ভাগাভাগির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন। এলাকাবাসীর ধারণা জ্বিনের বাদশা হাফেজ এনামুল হাসানের বোনের জামাই মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক ও তার স্ত্রী আজিবুন নেছার কাছে বিপুল অংকের টাকা গচ্ছিত থাকতে পারে।

প্রতারণার শিকার মাওলানা ইমরান জানান, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন আসামী হাফেজ এনামুল হাসান ওই টাকার একটি অংশ (৫০ লাখ) টাকা ব্যয় করে বাড়ী তৈরি করেছেন। অপর আসামী কামরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ২০ লাখ টাকার জায়গা কিনেছেন। বাকী টাকাগুলো তাদের কাছে আছে বলে তার ধারণা। মাওলানা ইমরান আহমদ জানান, ইতোমধ্যে ওই মামলার দুই আসামী আব্দুল কাদির ও হাফেজ এনামুল হাসান জামিনে মুক্ত হয়ে এসে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ফেরত পেতে অসহায় ব্যবসায়ী ইমরান আহমদ সর্বশেষ গত ২ অক্টোবর সিলেটের ডিআইজি বরাবরে আবেদন জানিয়েছেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন প্রতারণার মাধ্যমে সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার সাড়ে ৫ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও তার টাকা উদ্ধার হয়নি। সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গত ২৩ এপ্রিল জগন্নাথপুর থানায় মামলা করেন মাওলানা ইমরান আহমদ। মামলায় জগন্নাথপুরে বসবাসরত নেত্রকোণার কালিয়াজুরি থানার দাউদপুর গ্রামের আব্দুল কাদির তার ছেলে কামরুল ইসলাম ও ছেলের বউ রানু বেগমকে আসামী করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে আসামীরা জানান, সৈয়দপুর গ্রামের হাফেজ এমানুল হাসানের পরিকল্পনায় ও সহায়তায় তারা মিথ্যা জ্বিনের নাটক সাজিয়ে টাকা নিয়েছে। পুলিশ হাফেজ এনামুল হাসানকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এসআই মো: হাবিবুর রহমান রিমান্ড শেষে টাকা ফেরতের সত্যতা পাওয়া যায় বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এছাড়া আসামী কামরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রানু বেগম গত ২৬ এপ্রিল আদালতে ১৬৪ ধারায় টাকা আত্মসাত হয়েছে বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এসআই হাবিবুর রহমান মামলাটি নিয়ে বিশদ তদন্ত করেন। গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, মাওলানা ইমরান আহমদের সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অনেক প্রমাণ তিনি পেয়েছেন। তিনি মনে করেন ঘটনার পর পরই মামলা হলে টাকা উদ্ধার অনেক সহজ হতো। সরেজমিন জগন্নাথপুর ও সৈয়দপুর এলাকা ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।
এদিকে প্রতারণার শিকার মাওলানা ইমরান আহমদ জানান, সম্মান-ইজ্জতের দিকে তাকিয়ে তিনি প্রথমে মামলা করতে চাননি। সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি তিনি নিষ্পত্তি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন যারা সমঝোতায় উদ্যোগী হওয়ার কথা বলছেন তারাই প্রতারক এনামুল হাসানের গডফাদার। এদের অনেকেই এই টাকায় ভাগ বসিয়েছেন। তাই তিনি সমঝোতার আশা ছেড়ে দেন।

মামলা পিআইবিতে স্থানান্তর ঃ মামলার সর্বশেষ খবর নিয়ে জানা যায়, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে জগন্নাথপুর থানা থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা প্রতারণার এ মামলাটি সিলেটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন-পিআইবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সমঝোতার ব্যর্থ উদ্যোগ: প্রতারিত ব্যবসায়ী মাওলানা ইমরান আহমদ জানান, মামলার হওয়ার পর পুলিশী অভিযান শুরু হলে বিষয়টি সমঝোতার একটি উদ্যোগ নেন সৈয়দপুর আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা রেজওয়ান আহমদ। তিনি প্রতারণার শিকার ইমরানের বন্ধু ইসহাকপুরের হাশমত উল্লাহর বাড়ীতে সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করেন। এবং ওই বৈঠকে ইমরানকে হাজির হওয়ার জন্য ডাকেন। বৈঠকে আলাপ-আলোচনাক্রমে কিছু সময় নেন মাওলানা রেজওয়ান আহমদ। ৩ দিন পর মাওলানা রেজওয়ান আহমদ মাওলানা ইমরানকে সমঝোতা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন। এই সময়ের মধ্যে মাওলানা ইমরানের টাকা আত্মসাতকারী চক্র এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেন এবং কয়েকজনকে ধরপাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করেন বলে মাওলানা ইমরান আহমদ মনে করেন। তার ধারণা, জ্বিনের বাদশা হাফেজ এনামুল হাসানের বোনের জামাই মাওলানা রাজ্জাককে পুলিশের গ্রেফতার অভিযান থেকে বাঁচাতে সমঝোতার এ নাটক সাজানো হয়। তবে এ ব্যাপারে প্রিন্সিপাল রেজওয়ান আহমদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন ধরনের সমঝোতার উদ্যোগের কথা অস্বীকার করেন।

হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক বহিষ্কার এবং ৪০/৪৫ লাখ টাকার বান্ডিল ঃ সৈয়দপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মিসবাহকে কেন চাকুরিচ্যুত করা হলো সে কাহিনী জানতে গিয়ে ঘুরে ফিরে জ্বিনের বাদশার ভাগের টাকার কথা উঠে আসে। জানা যায়, এক শুক্রবার হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ছাত্ররা সার্টিফিকেট নিতে আসে। ছাত্ররা মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা আব্দুর রাজ্জাকের কক্ষে প্রবেশ করে ওয়ারড্রপে সার্টিফিকেট খুঁজতে থাকে এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মিসবাহ সচিবের কক্ষে প্রবেশ করে ছাত্রদের সার্টিফিকেট খোঁজায় সহায়তা করেন। সার্টিফিকেট খুঁজতে গিয়ে এক পর্যায়ে ওয়ারড্রপে ৪০/৪৫ লাখ টাকার বান্ডিল দেখতে পান মাওলানা মিসবাহ। তখনি গ্রমে জানাজানি হয়ে যায় এ টাকা জ্বিনের বাদশার ভাগ বাটোয়ারার টাকা। শিক্ষা সচিবের রুমে এত টাকা রাখার মানে কী? এমন প্রশ্ন দেখা দেয় গ্রামে। প্রথমে টাকা ভরা ব্যাগটি কালো দেখা গেলেও পরবর্তীতে এটি মাদ্রাসা থেকে মসজিদে স্থানান্তর করা হয় বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেন। এ সময় পুলিশ এলে শিক্ষা সচিব ওয়ারড্রপে হজ্বের দুই লক্ষ টাকা ছিল বলে পুলিশের কাছে বলে পার পেয়ে যান। এই শিক্ষা সচিব মাওলানা রাজ্জাক হলেন জ্বিনের বাদশা খ্যাত হাফেজ এনামুল হাসানের আপন ভগ্নিপতি। মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা মিসবাহ এত টাকার বান্ডিল দেখে ফেলায় ক্ষেপে উঠেন এই শিক্ষা সচিব। পরে তার নেতৃত্বে গড়ে উঠা একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একটি বাড়িতে বসে মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা মিসবাহকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। জানা গেছে, মাওলানা মিসবাহ মাদ্রাসায় রয়ে গেলে আরো অনেক রহস্য উদ্ঘাটিত হবে বলে একটি চক্রের ভয় ছিল।
সাংবাদিকদের সরেজমিন তদন্তকালে গ্রামবাসী জানান, আত্মসাতকৃত টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিরাপদের সারতে মাওলানা মিসবাহকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা ফখরুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শিক্ষা সচিবের রুমে টাকা পাওয়ার বিষয়টি শিক্ষক মিসবাহ পুলিশকে জানান। এবং ৪০/৪৫ লাখ টাকা ছিল বলে প্রচার করেন। এ ঘটনায় গ্রামবাসী তাকে মাদ্রাসা থেকে অপসারণ করেন। এক্ষেত্রে মাদ্রাসার মজলিশে আমেলা, শুরা বা কমিটির সদস্যদের বৈঠক হয়নি কেন কিংবা তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি কেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি পরিস্থিতির শিকার হয়ে তাকে অপসরণ করতে বাধ্য হয়েছি। ঘটনা প্রসঙ্গে মাওলানা মিসবাহ বলেন, মাদ্রাসা বন্ধের দিনে শিক্ষাসচিবের রুম খোলা দেখে আমি ঢুকি। তখন ছাত্ররা সেখানে ওয়ারড্রপে সার্টিফিকেট খুঁছছিল। এ সময় আমিও তাদর সহায়তা করি। এ সময় ওয়ারড্রপে সার্টিফিকেট খুঁজতে গিয়ে অনুমান ৪০/৪৫ লাখ টাকার বান্ডিল দেখতে পাই। এ টাকা মাদ্রাসায় কেন? নাকি জ্বিনের বাদশার ভাগের টাকা এখানে নিরাপদে রাখা হয়েছে এমন প্রশ্ন জাগে। অবশ্য শিক্ষা সচিব পুলিশের কাছে হজ্বের দুই লক্ষ টাকা রক্ষিত ছিল বলে পার পেয়ে যান। এরপর আমাকে মাদ্রাসা থেকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি। কিংবা শুরা সদস্যের কোন বৈঠক ডেকে আমাকে অপসারণ করা হয়নি। মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার রুমে হজ্বের দুই লক্ষ টাকা রক্ষিত ছিল। এসব জ্বিনের বাদশার কোন ভাগ-বাটোয়ারার টাকা নয়। পুলিশ তদন্তে আসলে তার সত্যতা পান। হজ্বের টাকা দুই মাস আগে এজেন্সিতে জমা দিতে হয়, তাহলে এ টাকা মাদ্রাসায় কেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এজেন্সি আমাকে বলেছে আপাতত হজ্বের নিবন্ধন করার কোন সুযোগ নেই। তবে কেউ হজ্বে না গেলে আপনাকে নিবন্ধন করার সুযোগ দেয়া হবে। আপনি টাকা রেডি রাখবেন। ঘটনার পরে হঠাৎ এজেন্সি আমাকে হজ্বে যাওয়অর সুযোগ দেয়। আমি তখন সেই জমা টাকা এজেন্সিতে দিয়ে নিবন্ধন করে হজ্বে যাই। এ শিক্ষা সচিব জ্বিনের বাদশা হাফেজ এনামুল হাসানের ভগ্নিপতি হওয়ায় ভাগের টাকা পেয়ে নিরাপদ রাখতে মাদ্রাসাকে বেছে নিয়েছেন বলে জানান এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি। শিক্ষা সচিব মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক পাশাপাশি হযরত শাহ সৈয়দ শামছুদ্দিন (রহ:) দরগাহ মসজিদের ইমাম ও খতিব। এছাড়া আরও জানা যায়, তিনি বদলা হজ্ব করেছেন। হজ্বের টাকা তাকে আগেই দিয়েছেন তারা। তাহলে নিবন্ধন করতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। এ শিক্ষা সচিবকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জ্বিনের টাকার ভাগের অংশ কে কে পেয়েছে তা বেরিয়ে আসতে পারে বলে মনে করেন মাওলানা ইমরান।
এলাকাবাসীর বক্তব্য ঃ এলাকাবাসী মাওলানা ইমরানের সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতে জ্বিনের বাদশা হাফেজ এনামুল হাসানসহ জড়িতদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের দাবী জানিয়েছেন। এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তি সৈয়দ মোস্তাক আহমদ পাখি বলেন, শিক্ষাসচিব আব্দুর রাজ্জাক এক সভায় তার ওয়ারড্রপে ৪০/৪৫ লক্ষ টাকা ছিল বলে জানান। তবে তিনি পুলিশের কাছে হজ্বের দুই লক্ষ টাকা ছিল বলে জানিয়ে পার পেয়ে যান। মানবাধিকার কর্মী পীরজাদা বদরুল ইসলাম খান বলেন, আগেও জ্বিনের বাদশাহ এনামুল হাসানের খারাপ রেকর্ড রয়েছে। এক সময় আমার বাড়িতে অস্ত্র রেখে আমাকে ফাঁসাতে চেয়েছিল সে। ইংল্যান্ডের স্যান্ডারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছালেহ আহমদ ছোট মিয়া বলেন, আমি চাই গ্রামকে দুর্নীতিমুক্ত করতে। এ বিষয়ে আমরা গ্রামে একটি সভাও করেছি। জ্বিনের বাদশার সহচর কামরুল দু’বার মাদ্রাসা চুরি করে। মাওলানা রাজ্জাকের কারণে সে পার পেয়ে যায়। জ্বিনের বাদশা প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এ টাকা অনেক প্রভাবশালীর মাঝে ভাগাভাগি হয়েছে। এ জ্বিনের কারণে এলাকায় দুর্নীতি বিস্তার লাভ করেছে। আমি চাই গ্রাম জ্বিনমুক্ত হোক। তিনি বলেন, হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মিসবাহকে বিনা কারণে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি তার বিচার দাবী করেন। সৈয়দ উজাইরুল হক মমনু বলেন, জ্বিনের বাদশার টাকার সাথে শিক্ষা সচিব মাওলানা রাজ্জাকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ঘটনার পর থেকে তার স্ত্রী গ্রামে থাকেন না। মাওলানা ইমরানের টাকায় এখন দুর্নীতির উৎসব চলছে। গ্রামকে কলঙ্কমুক্ত করতে ইমরানের টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানান তিনি।
“জ্বিনের বাদশা” হাফেজ এনামুল হাসানের বক্তব্য ঃ আত্মপক্ষ সমর্থন করে জ্বিনের বাদশা নামে খ্যাত হাফেজ এনামুল হাসান বলেন, আমি মামলার আসামী নয়। ১৬৪ ধারায় আমার নাম যুক্ত করা হয়েছে। কেন আপনার নাম আসে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়তো পুলিশ শিখিয়ে দিয়েছে তাই আমার নাম যুক্ত হযেছে। কেন পুলিশ আপনার নাম যুক্ত করবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি জানি না। হেলিক্টটার যুগে ঢাকা থেকে হাইকোর্টের জামিনের রিকল আসার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। এবং সাড়ে ৩ কোটি টাকা প্রতারণার ঘটনার সাথে তিনি কোনভাবে সম্পৃক্ত নন বলে জানান। তবে তিনি বলেন, মাওলানা ইমরান বেশ কিছু টাকা প্রতারিত হয়েছে।
প্রতারণার শিকার মাওলানা ইমরানের বক্তব্য ঃ মাওলানা ইমরান বলেন, আমি সরল বিশ্বাসে ধাপে ধাপে সাড়ে ৩ কোটি টাকা কামরুল গংদের দেই। তারা জ্বিনের বাদশা আমাকে ১৫’শ কোটি টাকা দেবে বলে টাকা নেয়। এ টাকা জ্বিনের বাদশা হফেজ এনামুল হাসান নিয়ে যান। এটি ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে আসামীরা বলেছে বলে জানতে পারলাম। এই টাকার একটি অংশ ভাগাভাগি হয়েছে। আমি প্রতারিত হওয়া টাকা ফেরত চাই এবং এই বিপুল অংকের টাকা ভাগাভাগির সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এসআই হাবিব (বর্তমানে ছাতকে বদলী) বলেন, আমি মামলার অধিকতর তদন্ত করছি। আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা মিলেছে। সাড়ে ৩ কোটি টাকা কোথায় কিভাবে আছে অনুসন্ধান করলে পাওয়া যেতে পারে। থানার অফিসার ইনচার্জ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনার সময় আমি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় কর্মরত ছিলাম। পরে এ থানায় যোগদানের পর জ্বিনের বাদশার বিষয়টি জানতে পারি। আমার এসআই হাবিব ঘটনার তদন্ত করেছেন।