প্রতিবাদ: যুক্তিহীন ঘেউ ঘেউ !

0
1444
blank
শিব্বির আহমদ ওসমানী
blank

শিব্বির আহমদ ওসমানী: মহান আল্লাহর অপার সৃষ্টি ১৮ হাজার মাখলুকাতের মধ্যে মানুষ সর্বোত্তম তার কিছু অনন্য গুনাবলির কারনে। যখন তার মধ্যে এই বৈশিষ্ট বা গুনাবলি না থাকে তখন শ্রেষ্ট্র মানুষ পশুত্বে পরিনত হয়। মহান আল্লাহ বলেন “উলাইকা কাল আনআম, বালহুম আদাল অর্থাৎ এরা পশু এর চেয়েও আরো নিকৃষ্ট।”
মানুষের বৈশিষ্ট হলো কথা বলা। কথা বলতে হবে মানুষের কল্যানের জন্য, উপকারের জন্য, প্রয়োজন সার্ব করার জন্য, এক কথায় মানুষের প্রয়োজনে মানুষ কথা বলবে। কিন্তু এ কথা হতে হবে যুক্তসঙ্গত, ন্যায়সঙ্গত। বিশেষ করে যখন অন্য মানুষের সমালোচনা করবেন বা অন্যের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন। তখন অবশ্য যুক্তির সাথে ন্যায়সঙ্গত কথা বলতে হবে। না হয় তা ঘেউ ঘেউয়ে পরিনত হবে। তাতে তো কোনো লাভ হবেই না বরং সমাজের ক্ষতি হবে ও সমাজকে বিভ্রান্ত করবে। অবশ্য যে কোনো বিষয়ে প্রত্যেকের দ্বিমত করার অধিকার আছে। অন্যের সংশোধনের উদ্দেশ্যে সমালোচনা করার অধিকার আছে প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তির।

কুকুর নামের পশু ঘেউ ঘেউ করলে কখনো মানুষের লাভ হয়। মাঝে মাঝে চোর আসলে কুকুর ঘেউ ঘেউ করে এতে মালিক লাভবান হন। কিন্তু মানুষরুপি পশু যদি অহেতুক যুক্তিহীন ঘেউ ঘেউ করে তাহলে সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। সমাজ কলুষিত হয়। কারন যুক্তিহীনরা ঘেউ ঘেউ করে সত্যকে চাপা দিতে চায়। লুটেরারা ও অনৈতিক ক্ষমতাভোগীরা যখন দেখবে সত্য উন্মোচিত হবে তখনই তার পালিত কিছু পশুদের দ্বারা সত্যকে চাপা দিতে চায়। সত্যকে চাপা দিতে বিভিন্ন কৌশল কাজে লাগায়। কৌশল হিসেবে মানুষের আবেগকে কাজে লাগাতে চায়। অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ ক্ষমতাকে ঠিকিয়ে রাখতে পীর বা বুজুর্গদের দোহাই দেয়। আসলে কোনো হক্কানী পীর বা বুজুর্গরা কখনও অন্যায়-অনৈতিক কোনো কর্মই সমর্থন করেন না। আমার চোখে দেখা পীরে কামীল হযরত শায়খে কাতিয়া (রহ:) যেমনি ভাবে দ্বীনের আন্জাম দিয়েছেন, জীবনকে দ্বীনের খেদমতে উৎসর্গ করেছেন তেমনি ভাবে সকল অন্যায়, অপকর্মের বিরোদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন।

৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম ওলি হযরত শাহজালাল (রহ:) এর মাজারের দিকে লক্ষ্য করলেই সহজে প্রতিয়মান হবে কীভাবে একজন ওলীর কবরকে শরীয়তের বাহিরে ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ হযরত শাহজালাল (রহ:) শরীয়তকে প্রতিষ্ঠিত করতে জীবন উৎসর্গ করছেন। ঠিক তেমনিভাবে আমাদের সমাজে সত্যকে চাপা দিতে পীর বা বুজুর্গদের দোহাই দেয়া হয়। এতে সাধারন মানুষের কাছে তাদের অপকর্ম ধরা পরে না। তারা কৌশলে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যেতে পারে। তারা অনৈতিক সুবিদা দিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী সুবিদাবাদী আহম্মকদের প্রটেকশন হিসেবে ব্যবহার করে, আবার কিছু আমজনতাকে মিথ্যা আবেগ দিয়ে ব্যবহার করে। তাই সম্মানের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে উৎসাহিত হন না। আবার কেউ সাধারন মানুষের মিথ্যা আবেগের রষানলে পরার ভয়ে প্রতিবাদী হন না।
আসুন, আমরা সবাই মিলে সব অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। আমাদের প্রতিবাদ হবে মিথ্যার বিরোদ্ধে, লুটেরাদের বিরোদ্ধে, মুখোশদারী শয়তানদের বিরোদ্ধে। যেমন, শাহজালাল (রহ:) মাজারের শয়তানদের অপকর্মের বিরোদ্ধে হবে আমাদের প্রতিবাদ, শাহজালাল (রহ:) এর মাজারের বিরোদ্ধে নয়। আমাদের প্রতিবাদ হবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মুখোশদারী লুটেরাদের বিরোদ্ধে, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরোদ্ধে নয়। আমাদের প্রতিবাদ হবে পীর বা বুজুর্গদের নাম ব্যবহার করে অনৈতিক কাজ করার বিরোদ্ধে, কোনো হক্কানী পীর বা বুজুর্গদের বিরোদ্ধে নয়। হক্কানী পীর বা বুজুর্গরা হলেন আমাদের রুহানী অভিভাবক।

লেখক: শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী।
www.Facebook.com/PrincipalShibbir