ভারতের পর এবার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পেতে যাচ্ছে ভুটান

0
638
blank
blank

ভারতের পর এবার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পেতে যাচ্ছে ভুটান। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তি এবং প্রটোকলের আওতায় এ ট্রানজিট সুবিধা দিতে যাচ্ছে ঢাকা। এ নিয়ে প্রাথমিক স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরের (এসওপি) খসড়া চূড়ান্ত করেছে ঢাকা।

সড়ক, রেল ও নৌপথ ব্যবহার করে সরাসরি পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এসওপির প্রাথমিক খসড়াতে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে রোববার বিকেলে সচিব মো. আবদুস সামাদের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ-ভুটান যৌথ কারিগরি কমিটি নিয়ে প্রথম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় এপ্রিলে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের আগে দুই দেশের সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসেবে প্রস্তুতি নিতে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট বিষয়ক এসওপির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।

এসওপির চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদ জানান, ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য পরিবহনে প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এটি উচ্চ পর্যায়ের চূড়ান্তকরণ সাপেক্ষে ভুটানকে পাঠানো হবে। তারা কোনো সংশোধনী না দিলে এটাই চূড়ান্ত হবে।

ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট ফির বিষয়ে তিনি জানান, একটি আলাদা কমিটি রয়েছে। তারাই ফি নির্ধারণ করবে। তবে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট ফি এবং অন্যান্য চার্জ ভারতকে দেয়া ফি ও চার্জের কাছাকাছি হবে বলে ধারণা দেন তিনি।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে সড়ক, রেল ও নৌ পথে ভারতের ওপর দিয়ে ভুটানের পণ্য পরিবহনের বিষয়ে বাংলাদেশ আগেই নীতিগতভাবে সম্মত। খসড়া এসওপিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার নৌ প্রটোকল বা ‘প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড’ (পিআইডব্লিউটিটি) এর যে রুটগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে থেকেই ব্যবহার করবে ভুটান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছিল ১৯৮০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ৭ নভেম্বর নতুন করে আবারও সই হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর নবায়ন করা হয়। এ বাণিজ্য চুক্তির প্রটোকলও একইভাবে ১৯৮০ তে সই হয় এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর সই করা হয়। আর দুই দেশের মধ্যে ট্রানজিট বিষয়ক চুক্তি হয়েছিল ১৯৮০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার থিম্পু সফরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌ-রুট ব্যবহার নিয়ে ভুটানের চুক্তি হয়েছিল। এরই আওতায় এসওপি চুক্তির মাধ্যমে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পাবে ভুটান।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হালুয়াঘাট ও নাকুগাঁও স্থলবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশটির সঙ্গে বুড়িমারী ও তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। এ ছাড়া ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার আওতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে ঢাকা। এর পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দর দিয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানি ও আমদানি করার সুযোগ চাইছে ভুটান। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভুটানকে ট্রানজিটের আওতায় এ দুটি বন্দরও ব্যবহার করতে দেয়া হবে।

ভূটানের প্রতি বাংলাদেশ বরাবই কৃতজ্ঞ। গত কয়েক বছরে ভুটানের রাজা জিগমে খেসর নামগিয়েল ওয়াংচুক একাধিক বার বাংলাদেশ সফর করেন। রানী জেতসুন পেমাও বাংলাদেশ ঘুরেছেন। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বেশ কয়েকবার ভুটান সফর করেছেন।