মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে শ্রীলঙ্কার প্রতি এইচআরডব্লিউ’র আহ্বান

0
774
blank
blank

দক্ষিণ এশীয় মুসলমান শরণার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ইস্টার সানডেতে সংঘটিত জঙ্গি হামলাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশীয় মুসলিম শরণার্থীদের ওপর আক্রমণের আশঙ্কায় এ আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখ্য, হামলায় উগ্রবাদী ইসলামী গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতার কথা সামনে আসার পর থেকে দক্ষিণ এশীয় মুসলিম শরণার্থীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে ক্ষুব্ধ জনগণ।

গত ২১ এপ্রিল রোববার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ইস্টার সানডে উদযাপনকালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো ও তার আশপাশের তিনটি গির্জা এবং তিনটি হোটেলসহ আটটি স্থানে সিরিজ বোমা হামলায় অন্তত ২৫৩ জন নিহত হয়। হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তাওহিদ জামাত বা এনটিজে নামে পরিচিত শ্রীলঙ্কার স্থানীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা জাহরান হাশিম মোহাম্মদকে হামলার মূল হোতা হিসেবে সন্দেহ করছে সে দেশের সরকার। আইএস-এর পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, বাগদাদির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে হাশিমের পরিকল্পনা মাফিক ওই হামলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে, শ্রীলঙ্কায় তিনটি গির্জাসহ আটটি স্থানে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটিতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা জোরালো হয়ে উঠেছে। বন্দর শহর নেগোম্বো ছেড়ে পালিয়ে অন্য শহরে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক শ’ মুসলিম। তারা যেখানে আশ্রয় নিয়েছে সেখান থেকেও তাদের তাড়াতে বিক্ষোভ চলছে। এ পরিস্থিতিতে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে দক্ষিণ এশীয় শরণার্থীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে শ্রীলঙ্কা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্থানীয়দের প্রতিশোধের হাত থেকে মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষের উচিত, ঝুঁকিতে থাকা শরণার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এর মধ্যে রয়েছে-মসজিদ, পুলিশ স্টেশনগুলোসহ অন্যান্য যেসব স্থানে শরণার্থীরা আছে সেগুলোতে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দেওয়া, তাদেরকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর এবং মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করা।’

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষি গাঙ্গুলি বলেন, ‘ইস্টার সানডেতে চালানো জঘন্য হামলায় দায়ীদের গ্রেফতার করাটাই শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষের একমাত্র দায়িত্ব নয়। বরং প্রচণ্ডরকমের ঝুঁকিতে থাকা মানুষদেরকে সুরক্ষা দেওয়াটাও তাদের দায়িত্ব। এর মানে হলো শরণার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত আশ্রয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের হুমকি প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রীলঙ্কায় সংখ্যালঘু খ্রিস্টান, মুসলিম ও হিন্দু মিলিয়ে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের বসবাস। রবিবারের হামলায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই শ্রীলঙ্কান নাগরিক। তবে নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৮ জন বিদেশি রয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে বাংলাদেশি, ব্রিটিশ, মার্কিন, তুর্কি, ভারতীয়, চীনা, ড্যানিশ, ডাচ ও পর্তুগিজ নাগরিক।