মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনার আবেদন করবেন মীর কাসেম

0
1139
blank

গাজীপুর: মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন জানাবেন একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত মীর কাসেম আলী। কাশিমপুর-২ কেন্দ্রীয় কারাগারে একাত্তরের এ ঘাতকের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে এ কথা জানিয়েছে তার আইনজীবী।

শনিবার মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেমের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আইনজীবী দেখা করেন। আইনজীবীদের অন্য চার সদস্য হচ্ছেন, মতিউর রহমান আকন্দ, বজলুর রহমান খান, নূর উল্ল্যহ ও নাজিবুর রহমান। বেলা ১১টার দিকে আইনজীবীরা কারা ফটকে আসেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বেলা পৌনে ১২টার দিকে আইনজীবীরা মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার মো. নাশির আহমেদ জানান, যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলী এ কারাগারের ৪০ নম্বর কনডেম সেলে বন্দি আছেন। সকালে আসামির সঙ্গে আইনজীবীরা দেখা করতে চাইলে অনুমতি দেয়া হয়। প্রায় ৪০ মিনিটের মত তারা কথা বলেছেন।

কারাগার থেকে বেরিয়ে তার আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ জানান, মীর কাসেম আলী তার সাজা বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, তা পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। শিগগিরই এ আবেদন দাখিল করা হবে।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় এ নেতার বিরুদ্ধে একাত্তরে চট্টগ্রামে খুন, অপহরণসহ ১৪টি অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে অন্যতম কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জনকে অপহরণের পর নির্যাতন কেন্দ্রে আটকে রেখে হত্যা  এবং পরে তাদের মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এই অভিযোগে তিন বিচারকের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সর্বসম্মতিক্রমে মীর কাসেম আলীকে সর্বোচ্চ দণ্ডের এ আদেশ দেয়। ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেয় ২০১৪ সালের নভেম্বরে।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মীর কাশেম আলী। দু’পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে গত ৮ মার্চ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

পুর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। গত ৭ জুন মীর কাসেম আলীকে কারাগারে ওই পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে জামায়াতে ইসলামির মুখপত্র দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে কাসেম আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি এ কারাগারে বন্দি রয়েছেন। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনালে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া।