ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, মৌলবাদীরা এ দেশের বড় বিরোধী শক্তি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তারা কখনো ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাদের সে স্বপ্ন ২০০৬ সালেই ধ্বংস হয়ে গেছে। রোববার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমিতে ড. নূহ-উল-আলম লেনিন সংকলিত ‘বাঙালি সমাজ ও সাহিত্যে সাম্প্রদায়িকতা এবং মৌলবাদ’ বইয়ের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সুযোগ পেয়ে এ দেশের ক্ষমতায় গেড়ে বসেছিল। তারা সাময়িকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। মাঝে মাঝে কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির করছে। এটিকে খুব বড় করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। মৌলবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থাও কম দায়ী নয়। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় একদিকে মুখে বলি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা, অন্যদিকে সংবিধানে উল্লেখ করি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। এভাবে সাংঘর্ষিক দুটি অবস্থায় রাষ্ট্র চলতে পারে না।
অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্বে অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ প্রতিষ্ঠার উৎস হচ্ছে মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় যা পড়ানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ রাষ্ট্র ও সংবিধানবিরোধী। আবার সরকারই এ মাদ্রাসা শিক্ষাকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। প্রতিবছর এ শিক্ষাব্যবস্থার পেছনে সরকার ১ হাজার ২০০ কোটি ব্যয় করছে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি ও জামায়াতকে আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তারা একই দলের দুটি রূপ। আমরা কিছু হলেই জামায়াতকে দায়ী করি। কিন্তু বিএনপি যে এদের বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সেটি বলি না। কারণ, তারা আমাদের ভাই, বন্ধু, সহপাঠী বা আত্মীয়।
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ড. নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, ‘আমার সহপাঠী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর করছে তখন আমারও দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছা হলো। তারই ভিত্তিতে এ গ্রন্থটির প্রকাশ। প্রাথমিকভাবে কাজটি আমি শুরু করেছি। আশা করি, সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ প্রতিরোধে আমাদের দেশের রাজনীতিবিদ, লেখক, গবেষকরা এটি আরো বিকশিত করবেন।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. আফসার আহমেদ ও মোহাম্মদ জমির।