ঢাকা: রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ও আহত শ্রমিকদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। আহত ব্যক্তিদের সহায়তার পথ নিজেদেরই খুঁজে বের করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। শনিবার রাজধানীর গুলশানে স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে ব্র্যাকের আয়োজনে ‘ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবনের পথে’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে মার্শা এসব কথা বলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, শ্রমিকদের পেশাগত ও স্বাস্থ্যগত সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পোশাক কারখানার অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাকে ১৫ লাখ ডলার দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া, শ্রমিকদের অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য সলিডারিটি সেন্টারকে ১০ লাখ ডলার দেয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রমিকরা অগ্নিনিরাপত্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সম্পর্কে ধারণা পাবে। বার্নিকাট বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে কর্মস্থলে দুর্ঘটনা কমানো গেলেও বন্ধ করা সম্ভব নয়। তিন বছর আগে রানা প্লাজার ধস এবং তার নিচে শ্রমিকদের চাপা পড়ার ঘটনা বাংলাদেশের নিরাপত্তাজনিত ব্যাপারে বিশ্বের নজর কেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই দিনে ১১ শ’রও বেশি শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছে, শত শত শ্রমিক আহত হয়েছে। ঐদিন মানুষ যা মূল্য দিয়েছে তার স্মৃতিচারণ করা গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ঐ দুঃখজনক ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। তারা প্রতিদিন যে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয় তা আমি শুনেছি। ওই ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়াদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হয়তো আমরা পারবো না। কিন্তু আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে পারি যেন এরকম ঘটনা আর না ঘটে।
অনুষ্ঠানে আলভিন ফ্যাশনের ইউনিয়ন নেত্রী রুনাকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুর্ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা করার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন রুনা। কারণ হিসেবে ওই নেত্রী বলেছেন, তিনি তার জীবনে আর কোনো তাজরীন বা রানা প্লাজার ঘটনা দেখতে চান না। বার্নিকাট বলেন, আমরাও বিশ্বাস করি শ্রমিকদের জোরালো ও শক্তিশালী মতামত প্রদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে তারা বলতে পারবে ‘আমরা এমন ফেটে যাওয়া দেয়ালের ভবনে কাজ করবো না’ এবং তাদের কথা শোনা হবে এবং তার সম্মান জানানো হবে। তাই আমরা শ্রমিকদের অধিকার উন্নয়নে কর্মসূচি সমর্থন করি এবং সেই মতামতকে শক্তিশালী করতে সরকার, ব্যক্তিগত খাত, আইএলও এবং অন্যান্য মিশনের সঙ্গে সবসময় সংশ্লিষ্ট রয়েছি। মার্কিন দূত বলেন, ভবিষ্যতের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষায় ভালোভাবে প্রস্তুতিতে যা করা হয়েছে তা আমি এখানে তার স্বীকৃতি দিতে চাই। একই সঙ্গে আপনাদের নিশ্চিন্ত করতে চাই যে, ওই প্রচেষ্টায় আমাদের জোরালো সমর্থন পাবেন।