শফিক রেহমানকে গ্রেফতার চরম স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ: খালেদা জিয়া

0
546
blank
blank

ঢাকা: বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, তাকে গ্রেফতার সরকারের চরম স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ। শনিবার এক বিবৃতিতে সরকারপ্রধানের উদ্দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, বাক, ব্যক্তি, লেখনি, ভাষণ, মুদ্রণের স্বাধীনতাসহ জনগণের সব গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিপন্ন করবেন না।

বিবৃতিতে বেগম জিয়া বলেন, শফিক রেহমান সত্য উচ্চারণের অবিচল এক সাহসী কলমযোদ্ধা। তাকে কব্জা করতে না পেরে সাজানো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা সরকারের চরম স্বেচ্ছাচারিতারই বহিঃপ্রকাশ।

মামলা-হামলা-খুন-জখম-গুম-অপহরণসহ নানাবিধ বিভৎস অনাচার আড়াল করে জনদৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সরকার শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করেছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে এজন্য যে, তিনি বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর অনাচার, ব্যর্থতা ও কূপমণ্ডুকতার বিরুদ্ধে অবিচল থেকে নির্ভয়ে লিখে যান। এই ঘৃণ্য অপকর্মটি করার আরেকটি কারণ হলো, সরকারপ্রধানের গণবিরোধী, অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারী নীতি শফিক রেহমান তার শাণিত লেখনির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেশের প্রতিথযশা সাংবাদিক ও সম্পাদকদের গ্রেফতার করে নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

খালেদা জিয়া বলেন, অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী এখন দেশের স্পষ্টভাষী ও সত্য উচ্চারণে অকুণ্ঠ বিদ্বৎজনদেরকেও নির্মূলের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে তার পছন্দের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সংখ্যক সদস্যদের দিয়ে। তাদের সেই দুরভিসন্ধি ও নির্মম আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটলো অশীতিপর, দুর্জয় সাহসী সাংবাদিক ও কলামিস্ট শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে।

সরকারপ্রধানের উদ্দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, বাক, ব্যক্তি, লেখনি, ভাষণ, মুদ্রণের স্বাধীনতাসহ জনগণের সব গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিপন্ন করবেন না। আপনি কখনো শফিক রেহমানের মতো ঋজু ও আত্মশক্তিতে বলিয়ান কলমযোদ্ধাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে পর্যুদস্ত করতে পারবেন না। কারণ আপনার সরকার আজ গণবিচ্ছিন্ন ও জনগণের শক্রপক্ষ।

অপর এক বিবৃতিতে গাজীপুরের নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নানের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে তার মুক্তির দাবি জানান খালেদা জিয়া।

ভিন্ন এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শফিক রেহমানের মতো দেশের একজন নির্ভিক সাংবাদিক ও কলামিস্টকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী প্রমাণ করলো যে, দেশের মানুষের আজ কোনো বাকস্বাধীনতা নেই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি এখন আইনের শাসনে নয়, বরং এখানে এক ব্যক্তির নির্দয় কর্তৃত্ব চলছে। জনপ্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে নিজেদের পছন্দের লোক বসিয়ে এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তারা গণতন্ত্রমণা দেশের বিরোধী দল, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সাধারণ নাগরিকদেরকে নিপীড়ন করে দেশে এখন এক ব্যক্তির ইচ্ছার শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। নিজেদের অপশাসন, কুকীর্তি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় চরম ব্যর্থতা ঢাকতেই সরকার এখন আইনের বদলে বেআইনের শরণাপন্ন হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা সাজানো মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।