সন্ত্রাসীদের কোন বর্ণ, ধর্ম ও দেশ নেই: প্রধানমন্ত্রী

0
681
blank

শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসীদের কোন বর্ণ, ধর্ম ও দেশ নেই। তারা সন্ত্রাসী এবং মানুষের জীবন ধ্বংস করে দেয়। সুতরাং আমি তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।

স্থানীয় সময় রবিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এম্পায়ার হোটেল কান্ট্রি ক্লাবের বলরুমে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে অনুষ্ঠানস্থলে পৌছালে পৌঁছালে প্রবাসীরা ফুল দিয়ে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রীকে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে কেবল জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেনি, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও সতর্ক রেখেছে।

তিনি বলেন, আমরা সন্ত্রাসবাদীদের চিহ্নিত করা মাত্রই তাদের বিরুদ্ধে ত্বরিত পদক্ষেপ নিচ্ছি। বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসবাদী, দুর্নীতিবাজ ও মাদকাসক্তদের ঠাঁই হবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, শ্রীলংকার ৮টি স্থানে সংঘটিত বোমা হামলায় বহু লোক নিহত ও আহত হয়েছে। আমি এই বর্বরোচিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। কয়েক সপ্তাহ আগে নিউজিল্যান্ডেও এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।

২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত চক্রের আগুন হামলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের জঘন্য কর্মকান্ডে অনেক নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং অনেকে আহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা এখন সমাজে সে হামলার প্রভাব লক্ষ্য করছি। কিছু লোক এখন সে ধরনের নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়েছে।

শেখ হাসিনা খাদ্য, জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ দেন।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের কল্যাণে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। দেশের একটি মানুষও ক্ষুধার্ত ও গৃহহীন থাকবে না, আর এটিই আমাদের সরকারের সিদ্ধান্ত।

দেশের মানুষই তার পরিবার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জীবনমান উন্নত করা তার দায়িত্ব।

তিনি বলেন, আমরা দেশপ্রেমের বোধ ও দায়িত্ব থেকে জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, চাকরি প্রার্থীরা যাতে তাদের জমি-জমা বিক্রি করার বদলে ব্যাংক ঋণ নিয়ে বিদেশ যেতে পারে সেজন্য আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছি। যেসব অঞ্চলে জনসংখ্যা বেশি সেখানে এই ব্যাংকের শাখা খোলা হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতারণারোধে তার সরকার ই-পাসপোর্ট চালু করতে যাচ্ছে। তবে শেখ হাসিনা শ্রমিকদের কোনো প্রকার প্রতারণার শিকার না হওয়ার জন্য নিজ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।

ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) মাহমুদ হোসাইন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ ও ব্রুনাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এ কে এম আহসান উল্লাহ।

অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আলী আশরাফ খান খসরু, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, স্থানীয় সময় দুপুরে ব্রুনাই পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেয়া হয়। ব্রুনাইয়ের যুবরাজ আল মুহতাদি বিল্লাহ বলকিয়া বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। তিনি দেশটির রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে পরিচয় করিয়ে দেন। সোমবার সকালে সুলতান হাসানাল বলকিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। এতে ব্রুনাইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।