সরকার রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ ধ্বংস করেছে: মির্জা ফখরুল

0
475
blank

ঢাকা: রাজধানীর পূর্ব আশকোনায় এক বাড়ি থেকে পুলিশের অভিযানে আহত অবস্থায় উদ্ধার শিশুটির ক্ষত-বিক্ষত ছবি দেখে বেদনা প্রকাশ করে তার বাবা-মা জঙ্গি কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকার রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ ধ্বংস করেছে। আজকে গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এরা অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে, পরিকল্পিতভাবে এই অনির্বাচিত অবৈধ সরকার এই কাজটি করছে, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিণত করবার তারা চক্রান্ত করছে। রোববার সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাধারণ পরিষদের ৯ম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আজকে পত্রিকায় একটা ছবি আছে, যে ছবি দেখে আমার পুরো অন্তর আত্মা কেঁপে উঠেছে। একটা চার বছরের শিশু গ্রেনেডে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে হাসপাতালে পড়ে আছে। কেন? জঙ্গি আক্রমণ হয়েছে। মা জঙ্গি হচ্ছেন, বাবা জঙ্গি, জানি না সত্য কী, কী অবস্থা জানি না। কিন্তু চার বছরের শিশু এক নির্বাক শক্তিদৃষ্টি দিয়ে সে হাসপাতালে পড়ে আছে। এই অবস্থা চলছে দেশে এখন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুধু ইসলাম ধর্ম নয়, অন্যান্য ধর্মের ওপরেও আঘাত আসছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি-ঘর ভেঙে দিচ্ছে, মন্দির ভেঙে দিচ্ছে, বৌদ্ধদের মঠ ভেঙে দেয়া হচ্ছে, খৃষ্টানদের গীর্জা-উপাসনালয় ভেঙে দেয়া হচ্ছে। সাঁওতালদেরকে তাদের বাসভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের প্রতি, কোনো ধর্মের প্রতি তাদের সম্মানবোধ নেই, তারা দায়িত্ব পালন করতে চায় না। কেউ নিরাপদ নয় এই দেশে।
খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইসহাকের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে দলটির মহাসচিব অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদের, সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যক্ষ সৈয়দ মাসউদ খান, নায়েবে আমির মাওলানা সৈয়দ মজিবুর রহমান, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আল্লামা নুর হোসাইন কাশেমী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আবদুল করিম খান, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপ-ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন ও ইসলামিক পার্টির আবদুল কাশেম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো মধ্যে আধিপত্যের প্রতিযোগিতা নিয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিণত করার চক্রান্ত করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার এই দেশটাকে, এই রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণ বাসের অনুপযোগী করে গড়ে তুলেছে। রাষ্ট্রের যে স্তম্ভ, যে পিলার, সেই পিলারগুলোকে তারা শেষ করে ফেলেছে। কথাটা আমার একার না। কালকেই মাননীয় প্রধান বিচারপতি বলেছেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করছে, যেটাকে বলা হয়- কে কার থেকে বড় সেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে। শনিবার ঢাকায় জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষাখাতের অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে সাবেক মন্ত্রী মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকে একেবারে ধ্বংস করে ফেলেছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এক্সপেরিমেন্ট করতে চায়, সেই এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে আপনার যে চিরাচরিত ব্যবস্থা যেটা মানুষ মেনে নিয়েছিল, যা দিয়ে আমাদের শিশুরা তৈরি হয়েছিল। সে সবকে ধ্বংস করে দিয়ে তাদের মতো করে এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে নিয়ে চলেছে।