সিকৃবি’তে দীপাবলী পালিত

0
1067
blank
blank

মোশাররফ, সিকৃবিঃ কালীপুজা ও দীপাবলী বা দেওয়ালি সনাতনধর্মীদের বা হিন্দুদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় মহোৎসব। শুধু বাঙালি হিন্দুদেরই নয় বরং এই ধর্মীয় উৎসবটি মহা আড়ম্বরে পালন করে থাকে সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এবং দূর্গা পূজোর এক মাসের মধ্যেই এই পূজো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এটি দেওয়ালি, দীপান্বিতা, দীপালিকা, সুখরাত্রি, সুখসুপ্তিকা এবং যক্ষরাত্রি নামেও অভিহিত হয়। দূর্গা পূজোর সময় মহালয়ায় শ্রাদ্ধ গ্রহণের জন্য যমলোক ছেড়ে যে পিতৃপুরুষগণ মর্ত্যে আগমন করেন বলে, তাঁদের পথ প্রদর্শনার্থে মূলত দীপাবলীতে উল্কা জ্বালানো হয়। আর এই কারণে দেওয়ালির দিন আলোকসজ্জা ও বাজি পোড়ানো হয়। কেউ কেউ রাত্রিতে নিজগৃহে দরজা জানালায় মোতবাতি জ্বালায়। কেউ কেউ বা লম্বা বাঁশের মাথায় কাগজের তৈরি ছোট ঘরে প্রদীপ জ্বালায়, একে আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় আকাশ প্রদীপ। দীপাবলি মানে আলোর উৎসব। প্রতি বিজয়ার ভাসানে পাঁচদিনের আনন্দ-বিদায়ে অবচেতনে হলেও যে বিয়োগ-বিধূর চেতনায় আবিষ্ট হয় মন, সেই মন দীপাবলিকে সামনে রেখেই আবার আনন্দের স্বপ্ন দেখে। দীপাবলী মূলত পাঁচদিন ব্যাপী উৎসব। দীপাবলীর আগের দিনের চতুর্দশীকে (এই দিনকে দীপাবলি উৎসবের প্রথম দিন বলা হয়) বলা হয় ‘নরকা চতুর্দশী’। এই দিনে শ্রীকৃষ্ণ এবং তাঁর স্ত্রী সত্যভামা নরকাসুরকে বধ করেছিলেন। চতুর্দশী পরের অমাবস্যা তিথি দীপাবলী উৎসবের দ্বিতীয় দিন, কিন্তু এই দিনই মূল হিসেবে উদযাপিত হয়। এই দিন রাতে শাক্ত ধর্মের অনুসারীগণ শক্তি দেবী কালীর পূজা করেন। তাছাড়া এই দিনে লক্ষীপূজাও করা হয়, কথিত আছে এই দিনে ধন- সম্পদের দেবী লক্ষ্মী বরধাত্রী রূপে ভক্তের মনোকামনা পূর্ণ করেন। চতুর্থ দিন হচ্ছে ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া, একে যম দ্বিতীয়াও বলা হয়। এই দিন বোনেরা ভাইকে নিমন্তণ করে, কপালে ফোটা দেয়, হাতে রাখী বেঁধে দেয়।
রবিবার সন্ধ্যায় সিকৃবি ক্যাম্পাসের লেকে প্রদীপভেলা ভাসিয়ে মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম শাহি আলম। এরপর প্যান্ডেল টানিয়ে সেখানে শুরু হয় ধর্মীয় আালোচনা। সিকৃবি পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ জীতেন্দ্র নাথ অধিকারীর সভাপতিত্বে বক্তৃতা রাখেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম শাহি আলম, পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা) প্রফেসর ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদার, কৃষি প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. পীযুশ কান্তি সরকার, ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মোহন মিয়া, প্রক্টর প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, মৌলিক বিজ্ঞান ও ভাষা বিভাগের প্রফেসর ড. স্নেহাংশু শেখর চন্দ, মৎস্য-জীববিদ্যা ও কৌলিতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.নির্মল চন্দ্র রায়, সিকৃবি ছাত্রলীগের সংগ্রামী সভাপতি ডাঃ শামীম মোল্লা,বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক ডাঃ হৃত্বিক দেব অপু প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পার্থ প্রতীম বর্মন। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী শিল্পীরা ভক্তিমূলক গান পরিবেশন করেন। এসময় ঢাকের বাদ্যে মুখরিত হয়ে উঠে সিকৃবি প্রাঙ্গন।