সিনহাকে আদালতের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হবে: আইনমন্ত্রী

0
777
blank

অনলাইন ডেস্ক : প্রয়োজন হলে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে আদালতের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সফটওয়্যার ও অ্যাপসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ওনার (সিনহা) যে ক্ষোভ, ওনার হতাশাগুলো, ওনার ব্রোকেন ড্রিমস, ওনার উচ্চাভিলাষ, এগুলো চরিতার্থ করতে পারেননি বলে আজকে উনি এসব আহাজারি করছেন। তো সে সব ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।

আইনমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, তার (সিনহা) যে এই দেশের প্রতি কোনো আনুগত্যবোধ নেই, সেটাই বোঝা যাচ্ছে। তার কারণ হচ্ছে, যেসব কথা তিনি বলছেন সেসব কথা আগে দেশে থেকেও বলতে পারতেন। কিন্তু সেগুলো যেহেতু সবই মিথ্যা তাই তিনি সেসব কথা দেশের বাইরে গিয়ে বলছেন। এতে এটা পরিষ্কার হলো তিনি এসব কথা বলছেন বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার জন্য।

এসকে সিনহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, মামলা যেহেতু হয়ে গেছে, আমি সে বিষয়ে কোনো কথা বলিনি, এখনও বলব না। এটা দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্ব।

তবে তিনি বলেন, দুদক বিষয়টি দেখবে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন হলে তা আদালতের মাধ্যমে হবে। মামলা যখন চলবে, তখন সেটি দেখা যাবে। এর বাইরে কিছু বলতে পারছি না।

আরপিও সংশোধনীর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আরপিও সংশোধনীর জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তা আমরা পেয়েছি। এগুলো দেখা হচ্ছে।

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে রাজনৈতিক তোপের মুখে ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান তখনকার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এর এক বছরের মাথায় তিনি বিদেশে বসে ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন, যা নিয়ে বাংলাদেশের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও আলোচনা চলছে।

রাষ্ট্রপতি ১২টি বিলে স্বাক্ষর করেছেন কিন্তু সেখানে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ছিল না। তাহলে আইনটি কী সংশোধনী করা হচ্ছে?-এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার উপস্থিতিতে আমরা যে বৈঠক করেছি সেখানে বলেছি এবং আজও বলছি, আগামী মন্ত্রিপরিষদ সভায় এডিটরস কাউন্সিল থেকে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে দরিদ্র ও নির্যাতিত অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদানে সফটওয়্যার ও অ্যাপস উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনিসুল হক বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ও টোল ফ্রি কলসেন্টার সার্ভিসের মাধ্যমে আইনি সহায়তা প্রদানের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ঘরে বসে আইন সহায়তা পাওয়ার বিষয়টি একসময় স্বপ্ন ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে স্বপ্নের দ্বার উন্মুক্ত করেছেন। এর ফলে ঘরে বসেই মানুষ বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ লাভ করছেন।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার উপ-পরিচালক আবেদা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হক, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ জহিরুল হক, জাতীয় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (জাটি) মহাপরিচালক ও সাবেক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক জাফরোল হাছান প্রমুখ।