সুনামগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে চার দালালসহ গ্রেফতার রোহিঙ্গা নারী পুরুষ

0
635
blank

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে পাসপোর্ট করতে গিয়ে ধরা খেল চার দালালসহ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভূঁয়া জন্ম নিবন্ধন সৃষ্টি করে পাসপোর্ট করার সময় যাচাই বাছাইকালে ভাষাগত সন্দেহের সৃষ্টি হলে নারীকে আটক করা হয়। আটকের পর যাচাই বাচায়ের মাধ্যমে শহরের চার দালাল ও একজন নারী রোহিঙ্গা ও একজন পুরুষ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, রোহিঙ্গা নারী রিয়াজুন জান্নাত(১৮), আব্দুল হালিম(২৪) এবং দালালরা হলেন জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের তেরানগর গ্রামের মৃত রমজান আলীর পুত্র ফরহাদ আহমদ(৩৩), একই উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত আতিউর রহমানের পুত্র মোটরসাইকেল ড্রাইভার মো: নুর হোসেন(২৩) সুজাতপুর গ্রামের মৃত আনোয়ার আলীর পুত্র দালাল মো: আমির উদ্দিন(২২) ও সুজাতপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার পুত্র দালাল জসিম উদ্দিন(২৪) আটক করা হয়।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের হিসাব রক্ষক সাইফুল মোহাম্মদ আরিফ পুলিশকে খবর দিলে সুনামগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় রোহিঙ্গা নারী রিয়াজুন জান্নাত(১৮)কে। পুলিশ সুত্র জানায়, রোহিঙ্গা নারী রিয়াজুন জান্নাত মায়ানমারের আইক্কা জেলার মন্ডু থানার হাস্যরাতা ময়দান পাড়ার আজিম আলী ও মরিয়ম খাতুনের মেয়ে। কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার বালুখালি (পানপাড়া) রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির-সি-৯ দলনেতা শুকুর আলীর তত্বাবধানে থাকাকালে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দালালচক্রের মাধ্যমে চলে আসে সুনামগঞ্জে। তাকে পাসপোর্ট করতে সহায়তা করে জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের তেরানগর গ্রামের মৃত রমজান আলীর পুত্র দালাল ফরহাদ আহমদ (৩৬)। তার সহযোগিতায় সুনামগঞ্জ পৌরসভা থেকে ইস্যুকরা জন্ম নিবন্ধনে রিয়াজুন জান্নাত এর স্থলে লিখা হয়, রিয়া আক্তার। বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে শহরের আলীপাড়া মহল্লা। স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, জামালগঞ্জ উপজেলার সুজাতপুর গ্রাম।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান পিপিএম (পদোন্নতিপ্রাপ্ত এসপি) জানান, সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য সুনামগঞ্জ জেলার ঠিকানা ব্যবহার করে আবেদন জমা দিলে যাচাই বাছাইয়ের সময় ভাষার অসংলগ্নতায় সন্দেহ দেখা দিলে পাসপোর্ট অফিসের কর্তব্যরত কর্মকতারা র্পুলিশের খবর দেয়। পুলিশ উপস্থিত হয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরে। এ ঘটনায় দালালদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চার দালাল ও এক পুরুষ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত আছে। এ ধরনের অপরাধের সাথে আরও যে দালাল জড়িত রয়েছে তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: হায়াতুন নবী, সহকারী পুলিশ সুপার কানন দেবনাথ ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শহিদুল্লাহ।
এ ব্যাপারে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক অজুর্ন কুমার ঘোষ জানান, রিয়া আক্তার নাম দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সুজাতপুরকে স্থায়ী ঠিকানা ও সুনামগঞ্জ শহরের আলীপাড়াকে বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করে দালালচক্রের সহায়তায় পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিল রোহিঙ্গা নারী। প্রাথমিক ভাবে কাগজপত্র যাচাই বাচাই করার সময় তার কথোপকথনে সন্দেহ হলে আমরা পুলিশে খবর দেই। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে সে মায়ানমারের রোহিঙ্গা স্বরনার্থী হিসেবে নিশ্চিত করেছেন।