স্বামীকে সাথে নিয়ে পরকীয়া প্রেমিককে খুন করে প্রবাসীর স্ত্রী

0
690
blank
blank

অনলাইন ডেস্ক : পাবনার সাঁথিয়ায় ৩ বছর আগে খুন হওয়া যুবক শহিদুল ইসলাম (৩২) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত আসামি হায়াত আলীকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

হায়াত আলী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার করশালিকা পুরানপাড়া গ্রামের গেদু শেখের ছেলে।
অন্যদিকে এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- একই গ্রামের মৃত রহমান মোল্লার ছেলে প্রবাসী ঠান্ডু মোল্লা (৩৭) ও তার স্ত্রী মোছাঃ ছালমা খাতুন (৩২)।
হত্যাকাণ্ডের শিকার শহিদুল ইসলাম (৩২) ময়মনসিংহ জেলার ধুবাউড়া থানার বাকপাড়া বাজার এলাকার বারেকের ছেলে।
প্রবাসী ঠান্ডু মোল্লার স্ত্রী ছালমা খাতুনের সাথে শহিদুল ইসলামের পরকীয়ার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। ছালমা খাতুন স্বামী বিদেশে থাকাকালে পরকীয়ায় লিপ্ত হন। পরে স্বামী দেশের আসার পর তাকে সাথে নিয়ে প্রেমিককে খুন করেন। তাদের সহযোগিতা করেন একই গ্রামের হায়াত আলী।
পিবিআই পাবনা জেলা প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন কান্তি চৌধুরী জানান, বাবার বাড়ি ময়মনসিংহে থাকাকালে ছালমা খাতুনের সাথে শহিদুল ইসলামের পরকীয়া গড়ে ওঠে। বিষয়টি তার ওমান প্রবাসী স্বামী জানার পর ক্ষুদ্ধ হন। এরপর দেশে ফিরে এসে তিনি স্ত্রীর কাছে সব জেনে শহিদুলকেই হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। তখন ছালমা সংসার টেকাতে তার স্বামীকে সহযোগিতা করে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর শহিদুল ইসলামকে ময়মনসিংহ থেকে কৌশলে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় নিয়ে আসেন ছালমা। সন্ধ্যায় ছালমা চতুরবাজারের এক জায়গায় তার সাথে গল্প করতে থাকেন। তখন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শহিদুলকে হায়াত আলী ও ঠান্ডু মোল্লা কুপিয়ে মারাত্নক আহত করে পালিয়ে যান। ১৭ অক্টোবর শহিদুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনার পর নিহতের ভাই পাহাড়ী রাজু সাঁথিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলার কূল-কিনারা করতে পারেনি। পরে সাঁথিয়া থানা থেকে মামলাটির তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করে। সিআইডি মামলার ৩ জন আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে আসামি হায়াত আলী ও ঠান্ডু মোল্লাকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
পরে বাদীপক্ষ এতে অসন্তুষ্ট হয়ে আদালতে নারাজি দেন। আদালত মামলার পুনঃতদন্তের ভার পিবিআইকে দেন। পিবিআই মামলাটি তদন্তের নির্দেশনা দেয় এসআই মোঃ সবুজ আলীর ওপর। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সবুজ আলী কিছুদিনের মধ্যেই তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করেন।
এরপর পিবিআই পাবনা জেলা প্রধান অতিরিক্ত ও পুলিশ সুপার সুমন কান্তি চৌধুরীর নেতৃত্বে পিবিআই’র বিশেষ টিম গঠন করা হয়। তারা মামলার মূল আসামিকে গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান। শেষ পর্যন্ত তারা বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ১নং আসামি হায়াত আলীকে গ্রেফতার ও পুরা রহস্য উদঘাটন করেন।
পিবিআই জানায়, হায়াত আলী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, মামলার ঘটনার পর থেকেই আসামি ঠান্ডু মোল্লা বিদেশে পালিয়ে যান। তিনি বর্তমানে ওমানে পলাতক অবস্থায় রয়েছেন।
গ্রেফতার হায়াত আলীকে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। তিনি আদালতে মামলার ভিকটিম শহিদুল ইসলামকে হত্যা করার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে পিবিআই কর্মকর্তারা জানান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সবুজ আলী জানান, গ্রেফতারকৃত মূল আসামি ঘটনার পর থেকেই কৌশলে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পলাতক ছিলেন। অনেক কৌশল অবলম্বন করে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হায়াতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা যাবে বলে তিনি জানান।