ঢাকা : চলতি বছরের ১০ মাসে সিকিউরিটিস ও বীমা পলিসির মাধ্যমে ৩ মিলিয়ন ডলার জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল আরব আমিরাতে এক সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।
‘দ্য এইটথ সেশন অব দ্য কনফারেন্স অব দ্য স্টেট পার্টিস টু দ্য ইউনাইটেড কনভেনশন এগেইন্সট করাপশন’ শীর্ষক ওই সম্মেলনে দুদক চেয়ারম্যান বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে গৃহীত বহুমাত্রিক কার্যক্রমের বর্ণনা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি অনুসরণ করছে। দুর্নীতিপরায়ণদের কোনো পরিচয় বিবেচনা না করেই সম্পূর্ণ নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিকভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দুর্নীতি এখন আর কোনো দেশের একক সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। একক কোনো দেশের একক চেষ্টায় দুর্নীতি কাঙ্খিত মাত্রায় কমিয়ে আনাও কঠিন।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনের ভূমিকাকে বাংলাদেশ দৃঢ়তার সাথে সমর্থন করছে। জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী সনদের নির্দেশনা অনুসারে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সম্পদ পুনরুদ্ধারে কিছুটা অগ্রগতি সাধন করেছে। এমন কিছু উদাহরণ টেনে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ কয়েকটি মানিলন্ডারিং মামলায় সাফল্যের সাথে সিঙ্গাপুর থেকে ২.০৬ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার এবং ০.৯৩ মিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
পাশাপাশি বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যকে ০.৩০ মিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন ২৫টি ব্যাংক হিসাব, ৬জন উপকারভোগীর বিভিন্ন বন্ড, সিকিউরিটিস এবং বীমা পলিসি জব্দের মাধ্যমে ২.৯২ মিলিয়ন ডলার মূল্যের অর্থ জব্দ করেছে। একই সময়ে ৫টি বৈদেশিক ব্যাংক হিসাবের ০.৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ১২.৪৪ একর জমি, বিভিন্ন প্রকারের ১০টি বাড়ি, ৪টি বিলাসবহুল এ্যাপার্টমেন্ট, দুইটি বাণিজ্যিক স্থাপনা এবং ৬টি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ৬১.৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের মাধ্যমে পুনরুদ্ধারের আদেশ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার সাজার হার বৃদ্ধির মাধ্যমে এর কর্মসম্পাদনার ধারাবাহিক মানোন্নয়ন ঘটছে। ইকবাল মাহমুদ বলেন, ২০১১ সালে কমিশনের মামলায় সাজার হার ছিল মাত্র ২০ শতাংশ, যা ২০১৯ সালে ৬৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
কনফারেন্সে তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে দুদক। এক্ষেত্রে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের জন্য যেসব ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা রয়েছেন -তাদের মাধ্যমে দুর্নীতির আগাম বার্তা বিনিময়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে-যাতে দুর্নীতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধে সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করা যায়। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এমন নেটওয়ার্কিংয়ের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে- যাতে নিয়মিতভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধারণা বিনিময় করতে পারে। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সমাজে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল গ্রহণ করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ স্বচ্ছ ও জবাদিহিমূলক গভার্ননেন্স (সুশাসন) এর জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও তথ্য কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান গঠন করেছে। এই কনফারেন্সে দুদক চেয়ারম্যান-এর সাথে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, দুদক পরিচালক নাসিম আনোয়ার, গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী, মো. মনিরুজ্জামান খান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.