ডেস্ক রিপোর্ট: অনেক সময় নারীরা তলপেটে অসহ্য ব্যথা অনুভব করেন। এটা কোনও সাধারণ ব্যথা নয়, এটা অনেকসময় নারীর গোপন রোগের ইঙ্গিত দেয়। নারীদেহের প্রজননতন্ত্রের বা তলপেটের মারাত্মক প্রদাহের মধ্যে পিআইডি বা পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ অন্যতম। এই প্রদাহ দুই রকম হতে পারে প্রথমত জনন অঙ্গের নিচের দিকের প্রদাহ দ্বিতীয়ত জনন অঙ্গের ওপরের দিকের প্রদাহ। অশিক্ষিত, দরিদ্র নারীদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ বেশি, কারণ তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা খুবই অভাব রয়েছে।
পিআইডি বা পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজের কারণ : স্বামীর যদি যৌনরোগ থাকে তা থেকেও নারী এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে বেশিভাগ ক্ষেত্রে পিআইডি যৌন রোগে আক্রান্ত হয় নারীরা। গনোরিয়া, ক্ল্যামাইডিয়া সংক্রমণের কারণেও পিআইডি হতে পারে।
জনন অঙ্গে যক্ষ্মা জীবাণুর সংক্রমণেও পিআইডি হতে পারে। মদ্যপান, ড্রাগ আসক্তি, একাধিক যৌন সঙ্গীর কারণেও পিআইডি হতে পারে।
এছাড়া অল্প বয়সে যৌন জীবন শুরু, মাসিকের সময় সহবাস, অস্বাস্থ্যকর ও অদক্ষভাবে গর্ভপাত করা এবং ডেলিভারি করানো, কনডম ব্যবহারে এ রোগ হয়ে থাকে।
লক্ষণ: তলপেটে তীব্র ব্যথা হওয়া। এ ব্যথা কোমর ও বাহুতে বিস্তার করতে পারে। পেটে ভারী অনুভব করা, সহবাসে এবং জরায়ু ও জরায়ুমুখ স্পর্শ করলে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা। যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব বা পুঁজ নির্গত ও জ্বালা-যন্ত্রণা হবে।
এছাড়া শরীরে জ্বর থাকতে পারে। মাথা ব্যথা, বমি ভাব, পেট ফাঁপা, খেতে অরুচি ও স্বাস্থ্য ক্ষীণ হয়ে যেতে পারে। বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। দীর্ঘদিন হলে এটা ক্যানসারের রূপ নিতে পারে।
পরীক্ষা : জরায়ু মুখের লালা পরীক্ষা করা। গনোরিয়া ও সিফিলিস পরীক্ষা, ট্রান্স ভ্যাজাইনাল আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।
কিছু কিছু সমস্যা আছে যাদের লক্ষণ পিআইডির মতো মনে হতে পারে যেমন- একিউট এপেনডিডসাইটিস, মূত্রনালীর তীব্র প্রদাহ, জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ বা একটোপিক (ectopic) প্রেগনেন্সি, সেপটিক অ্যাবরশন বা গর্ভপাত ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে দ্রুত পরীক্ষা করে সঠিক কারণ নির্ণয় করতে হবে।
চিকিৎসা : প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিলে পিআইডি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। তবে অবস্থা জটিল হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করাতে হবে।
শুধু তাই নয় পিআইডি রোগীর যৌন সঙ্গীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও যৌন রোগ নির্ণয় করে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। যৌন সঙ্গীর সঠিক চিকিৎসা না হলে রোগী আবার পিআইডিতে আক্রান্ত হয়ে পড়বে।