সিলেটমূখী দুটি উড়োজাহাজ ঝড়ের কবলে, যাত্রীরা আতঙ্কিত

0
1360
blank

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রী নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে অবতরণ করতে আসা ইউএস বাংলা ও নভোএয়ারের দুটি উড়োজাহাজ ঝড়ের কবলে পড়েছে। খবর সিলেট টুডের

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে ঢাকা থেকে আসা ওই দুটি উড়োজাহাজ সিলেটের কাছাকাছি আসার পরই ঝড়ের কবলে পড়ে। এসময় উড়োজাহাজ দুটির অস্বাভাবিক ঝাঁকুনিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন উড়োজাহাজে আসা যাত্রীরা। কেউ কেউ উড়োজাহাজের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে কান্না কাটি শুরু করেন।

তবে নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ পর নিরাপদেই অবতরণ করেছে উড়োজাহাজ দুটি। সামান্য ঝড়েই উড়োজাহাজের এমন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীদের অনেকেই। ৬৮ জন করে দুই করে প্রতিটি উড়োজাহাজে যাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে।

নভোএয়ারের ওই ফ্লাইটে করে সিলেট আসেন ডা. রকিবুল হাসান জুয়েল নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, সিলেটের কাছাকাছি আসার পরই পাইলট জানান বিমান ঝড়ের কবলে পড়েছে। এসময় রাডারের সিগন্যাল পাচ্ছেন না বলেও জানান পাইলট। উড়োজাহাজটিও অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। এতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। অনেকে কান্না শুরু করে দেন।

আর অপর উড়োজাহাজ ইউএস বাংলা’র ওই ফ্লাইটে ঢাকা থেকে সিলেট আসেন নাট্যকর্মী অরুপ রায়।

অবতরণের পর তিনি ফেসবুকে লিখেন, “আজ দ্বিতীয় জীবন ফিরে পেলাম। ঢাকা থেকে আজ সন্ধ্যায় সিলেট ফিরছিলাম। ইউএস বাংলা প্লেনটি সবাইকে সিলেট সীমানা ঢোকার তিন চার মিনিট আগেই আকাশেই শেষ করে দিত। অল্পের জন্য পরমকরুনাময়ের কৃপায় সবাই আজ জীবিত। আসলে লিখে বুঝানো যাবে না সেই মুহূর্ত।”

তিনি বলেন, সিলেটে অবতরণে কিছুক্ষণ আগেই ঝড়ের কবলে পড়ে উড়োজাহাজটি। এসময় উড়োজাহাজ জুড়ে ঝুাকুনি দিতে শুরু করে। ঝাকুনিতে অনেক যাত্রীর জিনিসপত্র ছিটকে যায়। সবার মধ্যেই আতঙ্ক দেখা দেয়। প্রায় ১০ মিনিট আকাশে এমন আচরণ করে উড়োজাহাজ।

ক্ষোভ প্রকাশ করে আরূপ বলেন, মুড়িরটিন মার্কা এমন উড়োজাহাজ যাত্রী বহন করে কেনো, সামান্য ঝড়েই যা উলোট-পাল্ট খেতে থাকে?

একই ফ্লাইটে সিলেট আসেন জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মধু সূধন ধর। তিনি ফেসবুকে লিখেন, “জীবনে আজ প্রথমবার মৃত্যু ভয় উপলব্ধি করলাম। হয়ত ঈশ্বরের কৃপা আর গুরুজনের আশীর্বাদের কারণে একটি বড় ধরনের বিপদ হতে রক্ষা পেলাম। আজ সন্ধ্যা ৭.১৫ ঘটিকায় US-Bangla BS137 ফ্লাইটে ঢাকা থেকে সিলেট আসার সময় বিমানটি ২/৩ বার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। আমার সাথে ছিলেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শ্রদ্বেয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহাবুদ্দীন স্যার। অবাক হওয়ার বিষয় কিছুক্ষণ পর সিওমেক এর সহযোগী অধ্যাপক শ্রদ্বেয় ডা. শিশির বসাক স্যার এসে জানালেন প্রায় একইসময় উড্ডয়নরত NOVOAIR এর একটি ফ্লাইট একই সমস্যায় পড়েছিল। ঈশ্বর সবার মঙ্গল করুক এবং সহযাত্রীরা এই ভীতিময় অভিজ্ঞতাটা যেন শ্রীঘ্রই ভুলতে পারে।”

এ ব্যাপারে ইউএস বাংলা ও নভোয়ার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।