খালেদা একজন পাকিস্তানী এজেন্ট: জয়

0
1050
blank

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার কড়া সমালোচনা করে খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। শনিবার তার ফেসবুক পেজে জয় লিখেন, ‘আমি সবাইকে আহবান জানাচ্ছি খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে প্রতিবাদ জানাতে। বিএনপি এবং তাকে দেখান যে, তার পাকিস্তানী প্রভুরা এবং জামায়াতি পোষা গুণ্ডারা আমাদের ভাই ও বোনদের যেভাবে হত্যা করেছিল সেই স্মৃতি অপপ্রচার চালিয়ে মুছে ফেলা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমার সাথে একত্রে দাবি জানান, খালেদা পাকিস্তানে ফিরে যা।’ উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজয় দিবসের এক আলোচনা সভায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এই সভায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে কত সংখ্যক মানুষ শহীদ হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ বিতর্কের পক্ষে অনেক বই ও নথিপত্র রয়েছে।’ খালেদা জিয়ার বিতর্কিত মন্তব্যের পর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাপরাধ বিষয়ের গবেষক, শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আইনজীবী এবং বিভিন্ন স্বাধীনতার স্বপক্ষের সংগঠন তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতি জয় সর্বশেষ খালেদার মন্তব্যের প্রতিবাদ জানালেন। জয় বলেন, ‘আমি ক্ষুব্ধ যে বিজয়ের মাসে খালেদা জিয়া ও বিএনপি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। খালেদা নৃশংস পাক সেনাবাহিনী এবং তাদের সহযোগি খুনি জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক আমাদের নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাকে পাকিস্তানীদের মতোই কমিয়ে বলে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘সে (খালেদা) দাবি করছে মাত্র কয়েক লাখ হত্যা হয়েছে। আজ বিএনপি এমনকি সেই মৃতের সংখ্যার উপর জনমত জরিপ করতে বলছে। স্বীকৃত সত্য সব সময়ই সত্য, তা কখনে জরিপ দিয়ে নির্ণয় হয় না।’ প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, ৩০ লাখ পুরুষ, নারী ও শিশুকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিল। হিন্দুদের নির্যাতন ও দেখা মাত্র গুলি করা হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘সমস্ত গ্রাম উজাড় করে ফেলা হয়েছিল। এমনকি তারা আত্মসমর্পণ করতে রাজি হওয়ার পর আমাদের বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে সবাইকে হত্যা করেছিল। এগুলো যুদ্ধে হতাহতের কোন ঘটনা ছিল না। এসব ছিল গণহত্যা।’ প্রধানমন্ত্রীর পুত্র বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখন আবারো এসব খুনিকে রক্ষার চেষ্টা করছে। সে নৃশংসতার শিকার মানুষগুলোর মন্ত্রী বানিয়েছে সেই খুনিদেরই। সে এখন থুতু ফেলেছে ৩০ লাখ শহীদের কবরে এবং থুতু ফেলেছে আমাদের দেশের মুখে।’ তিনি বলেন, ‘এরপর আমার আর এই মহিলার প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা অবশিষ্ট নেই। আমি ঘৃণা করি যে, সে এক সময় আমাদের জাতির প্রধানমন্ত্রী ছিলো। সে একজন পাকিস্তানী এজেন্ট। সে বার বার আইএসআই এজেন্টদের সাথে মিলিত হয়েছে এবং নির্বাচনগুলোতে আইএসআই থেকে টাকা নিয়েছে। তার উচিত বাংলাদেশ থেকে বিদায় হওয়া এবং তার ভালোবাসার পাকিস্তানে গিয়ে থাকা।’

এদিকে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় গত ২৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। লিগ্যাল নোটিশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মমতাজউদ্দিন আহমেদ মেহেদী সাত দিনের মধ্যে খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।