ঢাকা: রাজধানীর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই বিপ্লব ও সংহতি দিবসের সমাবেশ করবে বিএনপি। পুলিশের অনুমতি সাপেক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার অথবা পরদিন বুধবার যেদিনই অনুমতি মিলবে সেদিনই এই কর্মসূচি পালন করা হবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সোমবার বিকেলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
তিনি বলেন, আমরা ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে তাদের কাছে আবেদন করেছিলাম। তারা অনুমতি দেয়নি। এরপর ৮ নভেম্বর নয়া পল্টনে আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের জন্য ইতোমধ্যে পুলিশের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা অনুমতি পাইনি, অপেক্ষা করছি। আশা করি তারা আমাদেরকে অনুমতি দেবেন।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর ৭ নভেম্বরে বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি। এবারো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিল বিএনপি। কিন্তু সেখানে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এরপর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে দলটি। আজ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অনুমতির ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
রিজভী বলেন, সমাবেশকে সফলের জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবো। এখানে কোনো দ্বিধা নেই, সঙ্কোচ নেই। আমরা সমাবেশ করব। পুলিশ যদি মনে করে, অনুমতি দিবে না, ৯ নভেম্বর দিবে, তারা যেদিনই দিক- আমরা সমাবেশ করবো।
রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মো: মুনির হোসেন, শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, প্রত্যাশা করছি নিশ্চয়ই পুলিশ অনুমতি দিবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তাজনিত কারণসহ বেশকিছু অজুহাত দেখিয়েছেন। তাহলে নয়া পল্টনে তো কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। আমরা বিশ্বাস করি অনুমতি দেবে। পুলিশ যদি ৯ তারিখে দিতে চাই, তা আমাদের জানাতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই- দেশে সাংবিধানিক ও আইনসম্মতভাবে একটি প্রতিষ্ঠান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে পুলিশ যদি কাজ করে থাকে, তাহলে সভা সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক যে অধিকার বিরোধী দলকে সংবিধান দিয়েছে, এই অধিকারটিকে বানচাল করার সুযোগ তাদের নেই। এই অধিকারকে কোনোভাবে পর্যুদস্তু করতে পারেন না। যদি করেন, এটা যদি তাদের অভিপ্রায় হয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এই পুলিশ সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করছে। তারা দেশে আইনসম্মতভাবে কাজ করছেনা।
অনুমতি না পেলে বিএনপি কি করবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, সমাবেশ আমরা করবোই, এ বিষয়ে অন্য কোনো বক্তব্য নেই। সমাবেশ সফল করতে সামগ্রিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে আমাদের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন মতবিনিময় সভা করেছে, প্রস্তুতি সভা করেছে। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা আছে।
সমাবেশের অনুমতির জন্য পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ৭ নভেম্বর আমাদের জাতির ইতিহাসে ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। বিপ্লব সংহতি দিবস। সিপাহী-জনতার সম্মিলন হয়েছিল সেদিন। যারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে তারা যথাযোগ্য মর্যাদায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসটি পালন করে। সকালে ঐতিহাসিক জমায়েত ও লোকসমাগমের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষক মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের মাজারে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সব পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রতিবার যেমন সমাবেশ হয়, এবারো ঘোষণা করেছি। অনুমতির জন্য পুলিশের কাছে চিঠি দিয়েছি।