রিজার্ভ চুরিতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে: অর্থমন্ত্রী

0
1197
blank

ঢাকা: রিজার্ভ চুরির ঘটনায় যেই জড়িত থাকুক না কেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন, এ অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তি দেশি বা বিদেশি যেই হোক না কেন, সম্ভাব্য সব আইনের আওতায় তাকে আনা হবে। এ ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। সোমবার সংসদে প্রশ্নোত্তরে নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান আবুল মাল আবদুল মুহিত। সংসদে প্রশ্নোত্তর আজ টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থের পুরোটাই (১৯ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ইতোমধ্যে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, নিউইয়র্কে জমা হয়েছে। চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত দিতে প্রয়োজনীয় আইনি কার্যক্রম নিতে ইতোমধ্যে ফিলিপাইন সিনেটের ব্লু রিবন কমিটি এএমএলসি’কে নির্দেশনা দিয়েছে।

সংসদে অর্থমন্ত্রীর দেয়া তথ্যানুযায়ী, ফিলিপাইনে পাঠানো চুরিকৃত অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ সময়ের মধ্যে ফিলিপাইনের সিনেট কমিটিতে অনুষ্ঠিত সব শুনানিতে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন। চুরিকৃত অর্থ উদ্ধারে ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অব জাসটিস সহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কর্তৃক ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এএমএলসি’র সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের তথ্যানুযায়ী অভিযুক্তদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ৯ দশমিক ৮২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফিলিপাইনের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এএলএমসি-এর কাছে জমা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনার প্ররিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান গত ১৫ মার্চ পদত্যাগ করেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের দু’জন ডেপুটি গভর্নরকে তাদের সাথে সম্পাদিত চুক্তির অবসায়নক্রমে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

এ কে এম শাহজাহান কামালের এ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঘটনা সম্পর্কে সরকার অবহিত হয়ে গত ১৫ মার্চ সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং ৭৫ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েঠে। কমিটি ইতোমধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ঘটনার স্পর্শকাতরতা এবং আন্তর্জাতিকতা বিবেচনা করে কমিটির প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিজ্ঞ একটি ফরেনসিক টিমকে নিয়োজিত করে। ওই টিমের তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর তা বিশ্লেষণ করে এ ধরনের সমস্যা মোকাবেলায় সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।