জগন্নাথপুরের ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে দেওয়ার শংকা

0
649
blank
blank

জগন্নাথপুরে হাওরের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ কেটে মাছ শিকারের আশংকা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মধ্যে। তবে এ বিষয়ে জানতে শুক্রবার বিকেলে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কোনোভাবেই হাওরের বাঁধ কাটা যাবে না। কেউ যদি বাঁধ কাটেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বেড়িবাঁধ সুরক্ষায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের শ্রমিক নিয়োগ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বৈশাখ মাসের শেষের দিকে নতুন পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে একশ্রেণীর মাছ শিকারীরা মাছ ধরার জন্য রাতের আঁধারে বাঁধ কেটে দেয়। এরকম ঘটনা এ উপজেলায় অনেকবারই ঘটেছে। 
গত দুইদিন ধরে পাহাড়ি ঢলে জগন্নাথপুরের নদ-নদীতে বৃদ্ধি পানি পেয়েছে। গতকাল দুপুরে বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে রাতে ঝড় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মনে করে জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওর ও মইয়ার হাওরের বিভিন্ন বাঁধ এলাকায় স্থানীয় মাছ শিকারীরা অবস্থান করছেন। কারণ নতুন পানির ঢলের সঙ্গে ভালো মাছ শিকার করা যায়। 
মইয়ার হাওরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ছালিক আহমদ বলেন, বিকেল থেকেই কিছু সংখ্যক মাছ শিকারী হাওরে অবস্থান করছে। সন্ধ্যার পর এ সংখ্যা আরো বাড়বে। মাছ 
শিকারের জন্য রাতের আঁধারে বাঁধ কেটে দেওয়ার শঙ্কা আছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পূর্বে দুর্বৃত্তরা বাঁধ কেটে দিয়ে অনেকবার মাছ শিকার করেছে। বাঁধের ওপর নজর রয়েছে। হাওরে এখনও পাকা ধান রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। 
নলুয়া হাওরের আরেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য রনধীর কান্ত নান্টু দাস বলেন, বাঁধে পাহারাদার থাকলেও শংকায় আছি কখন রাতের আঁধারে মাছ শিকারীরা বাঁধ কেটে দেয়। সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওরের এখনও ২৫ ভাগের মতো পাকা ধান কাটার বাকী রয়েছে। 
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেক আগ থেকে বাঁধ সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের নিকট আহবান জানিয়েছি। নতুন পানির ঢল আসার সঙ্গে সঙ্গে মাছ শিকারীদের মধ্যে তৎপরতা দেখা দেয়। দুর্বৃত্তরা মাছ শিকারের লোভে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে দেয়। এবারও এমন শংকা রয়েছে। 
তিনি বলেন, জগন্নাথপুরে এখনও ২০ থেকে ২৫ ভাগ ধান কাটার বাকি আছে। 
তবে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, গতকাল পর্যন্ত এ উপজেলায় ৯৫ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, জগন্নাথপুরের হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে নিয়োজিত সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যদেরকে বাঁধে পাহারাদার রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।