নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রবাসী গুমের অভিযোগ, এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

0
223
blank

blank

নিজস্ব প্রতিনিধি: নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার রাজগঞ্জ এলাকার আলাদি নগর গ্রামে প্রবাসী গুমের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ জনতা জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাদি নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে এমদাদ উল্লাহ (৪২) সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। তিনি গত ১৮ই জানুয়ারি, ২০২৩ ইংরেজি সালে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন। তার ভাই মারুফ আলম, তিনি বর্তমানে দেশত্যাগী হয়েছেন বলে জানা যায়। মারুফ আলম দেশে অবস্থান কালীন সময়ে তার বসত বাড়ীর পাশে তাদের নতুন বাড়িতে মুরগীর খামার প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে পাহারার জন্য অস্থায়ী গৃহ নির্মাণ করেন। সম্প্রতি তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আত্মগোপন করেন বা দেশ ত্যাগী হন। উল্লেখিত মুরগির খামার দখল করে সেখানে মাদক ব্যবসা চালাতে থাকে কতিপয় ব্যক্তি। এমদাদ উল্লাহ দেশে এসে এসব জানতে পেরে মাদক ব্যবসায়ীদের বাধা-নিষেধ দেন কিন্তু তারা কোন কর্ণপাত না করে মদ, গাঁজা ইত্যাদির ব্যবসা অব্যাহত রাখে। এমদাদ উল্লাহ মাধক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এলাকার গণমান্য ব্যক্তিগণের নিকট বিচার প্রাথী হন। বিচার প্রাথী হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় মাদক ব্যবসায়ীরা। তারা এমদাদ উল্লাহ কে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে।

স্থানীয় ইউ.পি চেয়ারম্যান জনাব মুস্তাফিজুর রহমান সেলিমের এই বিষয় নিয়ে ইতিপূর্বে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। বিগত ২২ শে জানুয়ারি ২০২৩ ইংরেজি সালে রাতে ডি.বি পুলিশ পরিচয়ে কতিপয় ব্যক্তি থাকে বসত গৃহ হতে জোরপূর্বক বের করে ধরে নিয়ে মাইক্রোবাস (লাইটেস) যোগে তুলে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে এমদাদ উল্লাহর পরিবার এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হায়দার আলী ও মাসুদকে চিনতে পারেন। ঘটনার পর বেগমগঞ্জ থানা স্থানীয় ডি.বি কার্যালয়ে খোঁজ করেন তার আত্মীয়-স্বজন কিন্তু তারা এমদাদ উল্লাহকে আটকের বিষয় অস্বীকার করেন। তার আত্মীয়স্বজন ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ইংরেজি সাল পর্যন্ত এমদাদ উল্লাহর কোন খোঁজ না পেয়ে বেগমগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি ভুক্ত করেন যাহার নং ৭৮৯ তাং ২৩/০১/২০২৩।পুলিশ এমদাদ উল্লাহকে গুম বা অপহরণের ঘটনায় নিরব ভূমিকা পালন করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলাদি নগর গ্রামের একজন ব্যক্তি জানান ইউ.পি চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান সেলিমের নির্দেশে মাদক কারবারি হায়দার আলী ও মাসুদ ডি.বি পুলিশের সহায়তায় তাকে তুলে নিয়ে গুম করে। এই বিষয়ে চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সেলিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। নিখোঁজ এমদাদ উল্লাহর সাথে তার কোন শত্রুতা নেই। ডি.বি পুলিশের কর্মকর্তা সুহেল রানার সাথে যোগাযোগ করলে তারা এমদাদ উল্লাহকে তুলে নেওয়ার বিষয় অস্বীকার করেন।
এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ একজন ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এমদাদ উল্লাহর ভাই মারুফ আলমকে যারা মারপিট করেছে এবং একাধিক মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে তাদের একটি অংশ মাদক ব্যবসায়ী। প্রবাসী এমদাদ উল্লাহ (৪২) তাদের বাধা দেওয়ায় তারাই তাকে গুম করেছে। তবে বেশিরভাগ ব্যক্তি এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এখন পর্যন্ত এমদাদ উল্লাহর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। জিডি এন্ট্রি হলেও নিয়মিত মামলা রুজু হয়নি। পুলিশের ভূমিকাও রহস্যজনক বলে দাবি করেন এমদাদ উল্লাহর পরিবার। তাদের অভিযোগ ইউ.পি চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান সেলিমের নির্দেশে হায়দার আলী মাসুদ গং ব্যক্তিগণ ডি.বি পুলিশ পরিচয়ে প্রবাসী এমদাদ উল্লাহ কে গুম করেছে। এই নিয়ে এলাকার চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এমদাদ উল্লাহ উদ্ধার হোক এবং ঘটনার বিচার হোক দাবি করেন এলাকাবাসী।