পাকিস্তানের পতাকা পূনঃস্থাপনে জিয়ার মাজার সরানোর ষড়যন্ত্র: মির্জা ফখরুল

0
480
blank

ঢাকা: পাকিস্তানের পতাকা পূনঃস্থাপন করতেই সরকার জিয়াউর রহমানের মাজার সরানোর ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্বৈরাচার পতন দিবস ও গণতন্ত্র মুক্ত দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, লুই আইকান কখন, কীভাবে কোন পরিস্থিতিতে নকশা করেছে তা আমাদের জানতে হবে। তৎকালীন সবচেয়ে বড় ডিক্টেটর আইয়ুব খান ঢাকায় পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাজধানী করতে চেয়েছিলো। তিনি ফার্মগেটের এই জায়গাটিকে বেছে নিয়েছিলেন। আইয়ুবনগর নাম দিয়ে সংসদ ভবন, কেন্দ্রীয় সরকার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিলেন। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিশ্ববিখ্যাত স্থপতি লুই আইকানকে বেছে নেওয়া হয়। পরে পাকিস্তানের পতাকার ওপর ভিত্তি করে তিনি এই নকশা করেন বলে দাবি করেন ফখরুল।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, পাকিস্তানের পতাকাকে রক্ষা করার জন্য নকশা অনুযায়ি অন্যান্য স্থাপনা উচ্ছেদ করতে চান কিনা এ প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। আজকে শুধু শহীদ জিয়ার মাজার বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে চান? গণভবন, বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টার, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এই নকশায় আছে কিনা জানি না। এসব স্থাপনাও তুলে দিতে হবে। প্রয়োজনে তাই করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আপনাদের (সরকার) বলতে হবে লুই আই ক্যানের নকশা বাস্তবায়ন করতে চান এবং পাকিস্তানের পতাকাকে পুনঃস্থাপন করতে চান। এজন্য শুধু কথা বললেই হবে না, কি করতে চান, পেছনটা দেখুন সেটা জানুন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, আমরা কতটা অমানবিক হলে শিশুরা আশ্রয়ের জন্য প্রাণ বাঁচাতে এলে আমরা তাদের ফিরিয়ে দেই। সম্পূর্ণ মানবিক কারণে সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই,মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয় দিন। তাদের সসম্মানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমার ও বিশ্ববাসীর কাছে চাপ দেই।

নির্বাচন কমিশন নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘অতীতে আপনি সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন কিন্তু সেই সেই কমিটি নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে। আমরা সবার অংশগ্রহণে ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন চাই।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধানকে ব্যবহার করে অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় বসে আছেন। আপনার চেয়ে এরশাদ ভাল ছিল। এরশাদ আর আপনার মধ্যে পার্থক্য কোথায়? দাম্ভিকতা পরিহার করে সহনশীলতার মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করুন। অন্যথায় ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলে বসে থাকবে না বিএনপি। এটা অগ্নিকুণ্ড, জিয়ার মাজারে হাত দেবেন না। এখানে হাত দিলে সেই আগুনে হাত পুড়ে যাবে। এই সরকারেই শেষ সরকার নয়। আজকে জিয়াউর রহমানের মাজার সরানো হলে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের আত্মীয় স্বজনদের যেখানে দাফন করা হয়েছে সেদিকে জনগণ অগ্রসর হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আপনার সহচর স্বৈরাচারএরশাদকে জিজ্ঞাসা করুন শেরে বাংলানগরে জিয়াউর রহমানের মরদেহ আছে কি না? এই এরশাদেই তখন জিয়ার মরদেহ কাঁধে বহন করে শেরে বাংলানগরে দাফন করেছিল। কাজেই সাধু সাবধান হউন। মাজার ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন।

 

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল প্রমুখ।