প্রতিরক্ষা সমঝোতা দেশের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা: রিজভী

0
464
blank

ঢাকা: বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জনগণকে অন্ধকারে রেখে ভারতের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে সই দেশের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা। এর ফলে ভারতের কাছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার জায়গায় উপনীত হলো। শনিবার সকালে নয়াদিল্লিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৩৪টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই হওয়ার চার ঘণ্টা পর বিএনপির পক্ষে রুহুল কবির রিজভী এ প্রতিক্রিয়া জানান। বিকেল সাড়ে চারটায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।
গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৩৪টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই দেশ ও জনগণের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা মনে করি, সই করার আগে জনগণকে একটি শব্দও অবহিত না করা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ ও এ দেশের জনগণকে কোনো মর্যাদা দেয় না। তারা শুধু রক্ষা করতে চায় এ দেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে, যারা এখন জোর করে ক্ষমতায় আছে। তাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য কূটনীতিক পাঠিয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রাক্কালে। এই যে তাদের অশুভ ইচ্ছা, একটি রাজনৈতিক দলকে টিকিয়ে রাখা যেনতেনভাবে; সেটারই প্রতিফল দেখতে পাচ্ছি ক্রমাগতভাবে।
প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারকের সইয়ের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আমাদের সবচেয়ে অহংকারের জায়গা সার্বভৌমত্ব-স্বাধীনতা রক্ষার যে বিষয়টি, সেটি হচ্ছে আমাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এতে সই করে সেই ব্যবস্থাকে উন্মোচন করে দেওয়া হলো ভারতের কাছে। আমাদের নিরাপত্তা-অস্তিত্ব বিপন্ন করে দেওয়া হলো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা গণমাধ্যমে এ-ও দেখেছি, সঞ্চালকের কথা শুনে প্রধানমন্ত্রীর হাসি আর থামছে না। বরং তিনি এমন একটি কাজ করেছেন, যখন গোটা জাতি স্তব্ধ-নির্বাক, স্বীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার পথে, তিনি তখন তাঁর সহযোগীদের সন্তুষ্ট করাতে এ হাসি হাসছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে যে কান্না ঝরে পড়ছে, সেটি তিনি উপলব্ধি করতে পারছেন না। কীভাবে একটি দেশকে ক্রমান্বয়ে আরেকটি দেশের নিরাপত্তাকাঠামোতে ঠেলে দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষাকে দুর্বল করলেন।
রিজভী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন সোনালি পর্বে। তিনি ঠিকই বলেছেন, কারণ বাংলাদেশে থেকে যা পেয়েছেন, সেটি ছিল তাঁদেরও কল্পনাতীত। কোনো জাতীয়তাবাদী সরকার ক্ষমতায় থাকলে এতটা পেতেন না। তিনি আরও বলেন, জাতীয়তাবাদী সরকার থাকলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক থাকত, বৈদেশিক, কূটনীতিক ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকত, কিন্তু কোনো দেশপ্রেমিক সরকার প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে অন্য দেশের হাতে তুলে দিত না। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটি একটি অমানিসার পর্ব, ধূসর পর্ব।