মির্জাপুরে ৯ ডাকাতসহ অর্ধশতাধিক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

0
484
blank

আরাফাত ইসলাম মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৯ ডাকাতসহ অর্ধশতাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে মির্জাপুর থানা পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মির্জাপুর থানা পুলিশ উপজেলাকে মাদকমুক্ত করার লক্ষে ২৫ ফেব্রুয়ারী শনিবার থেকে বিশেষ এই অভিযান পরিচালনা শুরু করেন। এতে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অপারেশন চালিয়ে ৯ ডাকাতসহ অর্ধশতাধিক মাদকসেবী ও বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার রশিদ দেওহাটা এলাকা থেকে ১৫ পিস ইয়াবাসহ মোঃ সোহেল মিয়া (৩২), মহেড়া ইউনিয়নের আগ ছাওয়ালী থেকে ৩৪ পিস ইয়াবাসহ জসিম মিয়া (৩৫) ও তার মা জমেলা বেগম (৫০), সদরের বাইমহাটি বাজার থেকে ৬ লিটার চোলাই মদসহ রবি দাস (৫৫), শান্তি রবি দাস (৩৫) ও তার স্ত্রী সারতী রবি দাস (৩০), বাঁশতৈল ইউনিয়নের গায়রাবেতিল গ্রাম থেকে ২০ লিটার চোলাই মদসহ সুদীপ কোচ (২৮) কে গ্রপ্তার করেন।
এদিকে ২৬ ফেব্রুয়ারী রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পোষ্টকামুরী চরপাড়া নামক স্থানে ডাকাতির প্রস্ততিকালে ডাকাত দলের ৯ সদস্যকে গ্রেপÍার করা হয়। এরা হলেন, মির্জাপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুর রহমান এর ছোট ভাই মোঃ আরশেদ আলী (৪০), সদরের পোষ্টকামুরী গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান সল্টুর ছেলে মোঃ শাহিন মিযা (৩৮), সমেজ মিয়ার ছেলে ছোবহান আলী (৩০) সদরের ইউনিয়ন পাড়া এলাকার আব্বাস মিয়ার ছেওে লাভলু মিয়া (৩২), উপজেলার গোড়াই ইউনিয়ের গন্ধব্যপাড়া গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৬), একই গ্রামের হবি সিকদারের ছেলে সোহেল মিয়া (৩২), মূসা মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (৩০) ও পার্শ্ববর্তী দেলদুয়ার উপজেলার পরেশ শীলের ছেলে প্রকাশ শীল (২৫) এবং ডাকাতি মামলার আসামি উপজেলার আজগানা গ্রামের মীর ফজলের ছেলে বুলু মিয়া (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেন। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহারকৃত বিপুল পরিমাণ দ্রব্যাদি যথাক্রমে রশি, রামদা, চাপাতি ও ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারী রাতে ৭ লিটার চোলাই মদসহ কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার চর খুদাইমারি গ্রামের কুদরত আলীর ছেলে হালিম মিয়া (৪০) কে মির্জাপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই রাতে ২০ পুড়িয়া হেরোইনসহ উপজেলার গোড়াইল গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে রাজু মিয়া (৩০), বানাইল ইউনিয়নের গ্রামাটিয়া গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে (৩০) ও ভুসুন্ডি গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে নজরুল কে গ্রেপ্তার করেন।
এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্য থেকে ১৩ জনকে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে টাঙ্গাইল জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মোশারফ হোসেন।
তারপর ২৮ ফেব্রুয়ারী মির্জাপুর থেকে ২শ গ্রাম গাজাসহ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার আব্দুল হকের ছেলে আয়নাল মিয়া (৩১), উপজেলার নগর ছাওয়ালী গ্রামের সাইজ উদ্দিনের ছেলে হানিফ মিয়া (৩৫), ০১ মার্চ ৪ গ্রাম হেরোইনসহ মানিকগঞ্জের আঙ্গারিয়া গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে বিপ্লব (২৯), একই এলাকার অলক দেওয়ানের ছেলে লিটন (২৮)। এরপর ০২ মার্চ ২০ পুড়িয়া হেরোইনসহ এই উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের রাখেরটেকী গ্রামের তোতা মিয়ার স্ত্রী মোসাঃ শাহানাজ বেগম (৪০), গোড়াই নাজিরপাড়া এলাকার মনির হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩৮) ও একই এলাকার মিনার হোসেনের স্ত্রী নূরজাহান বেগম (২৮) এবং সর্বশেষ অভিযানে শনিবার দুপুরে সদরের সওদাগড়পাড়া এলাকা থেকে স্থানীয় মাদক সম্রাট লিটন (৪২) কে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ তথ্য দিয়েছেন।
এ ব্যপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, মির্জাপুরকে মাদক মুক্ত উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে থানা পুলিশ নিয়মিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত এক সপ্তাহে বিপুল পরিমান বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্যসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মাদক ব্যবসায়ী ও ৯ ডাকাত গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান কওে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মাদক দ্রব্য নির্মূলে ভবিষ্যতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।