জগন্নাথপুরে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে হতাশা ও উল্লাস

0
473
blank
blank

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন নিয়ে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হতাশা ও উল্লাস বিরাজ করছে। আসন্ন জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত ৫ ও বিএনপি সমর্থিত ৩ সহ মোট ৮ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। বর্তমানে আওয়ামীলীগ সমর্থিত ২ ও বিএনপি সমর্থিত ১ সহ মোট ৩ জন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। বাকি ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

এবারের পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মিজানুর রশীদ ভূইয়া, সাবেক পৌর কমিশনার লুৎফুর রহমান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলহাজ্ব শাহ নুরুল করিম, আব্দুল হান্নান সহ আওয়ামীলীগ সমর্থিত ৫ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। এর মধ্যে মিজানুর রশীদ ভূইয়াকে দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে জগন্নাথপুর পৌর, উপজেলা ও সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রে তাদের প্রস্তাব পাঠান। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মিজান সমর্থকদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। এ সময় এলাকার সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যক্তি মনাফ সমর্থকরা হতাশায় ভেঙে পড়েন। হঠাৎ করে গত মঙ্গলবার দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে।

অবশেষে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নির্বাচনী বোর্ডের চুড়ান্ত তালিকায় জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আলহাজ্ব আব্দুল মনাফের নাম ঘোষণার খবরে মনাফ সমর্থদের মধ্যে উল্লাস দেখা দিলেও মিজান সমর্থকরা হতাশায় ভেঙে পড়েন। এ নিয়ে বুধবার স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মী ও জনসাধারণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ জানান, স্থানীয় আওয়ামীলীগ আমার উপর অবিচার করলেও অবশেষে দলীয় হাই কমান্ড আমাকে মুল্যায়ন করেছে। এতে আমি অনেক খুশি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এবারের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয় হবে ইনশাল্লাহ। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত মিজানুর রশীদ ভূইয়া জানান, দলের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে আমি নির্বাচনে অংশ নেব না।

জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুল আহমদ ভূইয়া ও জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র পৌর আওয়ামীলীগের সদস্য সচিব আবাব মিয়া বলেন, দলীয় প্রার্থী আব্দুল মনাফ এবারের নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী। জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আকমল হোসেন বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মিজানের নাম কেন্দ্রে পাঠালেও দলীয় হাই কমান্ড আব্দুল মনাফের নাম ঘোষণা করেছেন। এতে তৃণমুল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও মিজান সমর্থকরা একটু কষ্ট পেলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে স্বাত জানিয়ে আমরা নৌকার পক্ষে কাজ করব।

এদিকে- মেয়র পদে বিএনপি সমর্থিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী রাজু আহমদ, আবিুল বারী আয়হান ও আলফুজ্জামান বকুল তাদের প্রার্থীতা ঘোষণা করলেও প্রথমে দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আবিুল বারী আয়হানের নাম শোনা গেলেও অবশেষে কেন্দ্রীয় বিএনপির চুড়ান্ত তালিকায় রাজু আহমদের নাম ঘোষণা করা হয়।

এ ব্যাপারে দলীয় মনোনীত প্রার্থী রাজু আহমদ জানান, দল আমার বিগত দিনের কাজের মুল্যায়ন করেছে। এতে আমি অনেক খুশি। তিনি নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত আবিবুল বারী আয়হান বলেন, রাজু দলীয় মনোনয়ন পেয়েছে বলে আমি জানি না। তবে সে পেয়ে থাকলে আমি বিদ্রোহী প্রার্থী হব না। আমি দলের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব।

জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শিক্ষাবিদ লেঃ কর্ণেল অব সৈয়দ আলী আহমদ বলেন, আমাদের দলে কোন বিভক্তি নেই। আমাদের একক প্রার্থী রাজু আহমদকে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব এবং আমাদের প্রার্থী বিজয়ী হবে ইনশাল্লাহ।

অবশেষে দলীয় প্রার্থী বদলের পর নতুন করে ভোটের হিসাব-নিকাশ মেলাচ্ছেন প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক ও সর্বস্থরের জনসাধারণ। শেষ পর্যন্ত জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ, বিএনপি মনোনীত রাজু আহমদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শাহ নুরুল করিম প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন বলে জানা গেছে।