দেশের স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের দাবি বিএনপি’র

0
577
blank
blank

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বার্থবিরোধী চুক্তি করেছে জানিয়ে বিএনপি বলেছে, আমরা প্রতিবেশী ভারতের সাথে সমতাভিত্তিক সুসস্পর্ক চাই। কিন্তু এই সরকার যা করছে- তাতে দেয়া নেয়ার বিষয় নেই- আছে শুধু দেয়ার। এমনকি ভারতকে গ্যাস-পানি দেয়ার বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন ‘ঠাকুর‘ পুরস্কার। দেশের স্বার্থবিরোধী এমন অসম চুক্তির অধিকার জনগণ সরকারকে দেয়নি। কাজেই আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরের সময় স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি ও সমঝোতার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই এবং দেশের স্বার্থ হানিকর সকল চুক্তি বাতিল চাই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ার কারণে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়- এমন একটি শক্তি যখন কৌশলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে তখন তার পরিণতি দেশ ও দেশের জনগণের জন্য কতটা ভয়াবহ ও ক্ষতিকারক হয় তার সাম্প্রতিক প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল। সফরকালে স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি ত্রিপুরার সাব্রুম শহরের জনগণের ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর নির্বিঘ্নে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে যৌথ পর্যবেক্ষণের জন্য রাডার বসানোর অনুমতি দিয়েছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশ থেকে এলপিজি গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে। অথচ বহু বছর ধরে তিস্তা এবং ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার ব্যাপারে শুধুই আলোচনা করে চলেছে। এবারো শুধু আশ্বাসই পেয়েছে- কোনো স্পষ্ট নিশ্চয়তা পায়নি। আসামের নাগরিক পঞ্জির প্রেক্ষিতে কয়েক লক্ষ আসামবাসীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আসাম রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের স্পষ্ট হুমকির মুখে দুই প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে এ ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতির উল্লেখ নেই।

তিনি বলেন, ভারতে পাটজাত দ্রব্যসহ অন্যান্যে পণ্য রফতানির উপর আরোপিত অন্যায় বাধা অপসারণে নিশ্চয়তা আদায় করতেও বাংলাদেশ সরকার নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এতে বোঝা যায় যে, রাষ্ট্রীয় সফরের আগে সরকার যথাযথ প্রস্তুতি নেয়নি, দেশের জনগণকে কিছু জানতেও দেয়নি। এসব নিজ দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে শক্তিমান প্রতিবেশীকে খুশি করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার সাময়িক ও ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র। ইতোমধ্যেই দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী এসব চুক্তির প্রতিবাদে দেশবাসী ফুঁসে উঠেছে। সচেতন ছাত্র সমাজ আন্দোলনে সোচ্চার হয়েছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সমালোচনায় ভীত সরকার তার দলীয় লাঠিয়ালদের দিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদী পোস্ট দেওয়ার জন্য বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারকে খুন করেছে। কিন্তু এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড আন্দোলনের আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে মাত্র- কাউকে ভীত করতে পারেনি। আজ গোটা দেশের জনগণ এই সরকারকে দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিসর্জনকারী এক ক্ষমতালিপ্সু শাসক বলে মনে করে। জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের সোনালী ফসল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে এই দূরাচারী শাসকের পতন চায়।