রাতারাতি পুরান ঢাকাকে ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব নয়: গণপূর্তমন্ত্রী

0
613
blank
blank

ঢাকা: নিরাপদ, পরিবেশসম্মত ও বিল্ডিং কোড অনুযায়ী রাজধানীকে সাজাতে নানামুখী পরিকল্পনার কথা জানালেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, ঢাকা শহরের বয়স অনেক হয়েছে। পুরান ঢাকার ভবনগুলো এমনভাবে গড়ে উঠেছে। যে কারণে পুরনো ঢাকাকে রাতারাতি ভেঙে ফেলে নিরাপদ ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশসম্মত আবাসন এখনো গড়ে তুলতে পারিনি। আপাতত পুরান ঢাকাকে একেবারে ঝুঁকিহীন সব রকম ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না।
শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘ইমারত নির্মাণে সরকারের দায়িত্ব ও নাগরিকদের করণীয়’ শীর্ষক মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, তবে পুরান ঢাকাকে নিয়ে আমরা রি-ডেভলপমেন্ট প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এই প্রকল্পের আওতায় পাঁচ কাঠা জায়গার ‍উপর যদি তিনটি ভবন থাকে তাহলে আমরা পরিবেশসম্মত, বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন করে দেব এবং রেশিও (অনুপাত) অনুযায়ী ওই ভবন মালিকদের ফ্লাট দেব।

তিনি বলেন, আমাদের নতুন শহরগুলো যেমন- পূর্বাচল, ঝিলমিল, উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প; সেখানে ৪৫ শতাংশ জায়গা ফাঁকা রেখে ভবনের অনুমোদন দিচ্ছি; যাতে একটি বাড়ি থেকে আরেকটা বাড়ির মাঝখানে বিশাল জায়গা ফাঁকা থাকে, সেখানে যেন পরিবেশ দূষণ না হয়। সেখানে যেন মানুষ মুক্ত বাতাস নিতে পারে। খেলার মাঠ, পার্ক, লেক, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা রেখেছি।

রেজাউল করিম বলেন, ঢাকা শহরের অনেক ইমারত আছে, যে ইমারত এতো পূর্বে হয়েছে যে, একটির সঙ্গে আরেকটি লেগে আছে, যেমন পুরান ঢাকা। সেগুলোকে রাতারাতি ভেঙে ফেলে নতুন কিছু করা সম্ভব হয়নি।

জায়গার মালিকরা রাজি হবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস মানুষকে যদি বোঝাতে সক্ষম হই যে, আপনার সন্তান আপনার পরিবার বিপন্ন হয়ে গেলে এই রক্ষণশীলনতার মায়া নিয়ে আপনার কী হবে? ওই মায়ার চেয়ে বড় মায়া হলো- আমাদের জীবনের। আমার বিশ্বাস, তারা বুঝবে।

তিনি বলেন, আপত অবস্থায় পুরোনো ঢাকায় একেবারে ঝুঁকিহীন সব রকম ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ সেখানে একটা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। আর গাড়ি যাওয়ার মতো অবস্থা করতে হলে রাস্তার দরকার, সেজন্য অনেক ভবন ভাঙতে হবে। আর ভবনগুলো এতো নাজুক পরিস্থিতি যে, একটা ভবনের একটি ইটে আঘাত করলে গোটা ভবনে ভেঙে পড়তে পারে। কাজেই এসব বিষয় মাথায় রেখেই আমরা এগোচ্ছি।

কাজ করতে গিয়ে কোনো চাপে আছেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি একজনের চাপে বিশ্বাস করি, উপরে আল্লাহ মাঝখানে শেখ হাসিনা। মাঝখানে কোনো চাপটাপ কিছু নাই। আমি ভয় পাই আল্লাহকে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি শেখ হাসিনাকে ঘিরে।

কোনো চাপের কাছে মাথানত করি না। আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন শেখ হাসিনা, তিনি যেটা চাইবেন সেটা হবে। তিনি চেয়েছেন কোনো অপরাধীর কোনো দুর্নীতি, কোনো অনিয়মকে সহ্য করা যাবে না। জিরো টলারেন্স, সেজন্য কোনো চাপই আমাকে আমার লক্ষ্য থেকে ফেরাতে পারবে না।

সংগঠনের সভাপতি মশিউর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম, অর্থ সম্পাদক রুহুল আমিন প্রমুখ।