টার্গেট অক্টোবর প্রস্তুত হচ্ছে ইসি

0
971
blank
blank

জাহাঙ্গীর কিরণ: অক্টোবরে তফসিল ঘোষণার লক্ষ্য নিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ডিসেম্বরের শেষ ভাগে ভোট সম্পন্ন করতে ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত, ব্যালট বাক্সসহ প্রয়োজনীয় নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ এবং প্রায় ৭ লক্ষাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা মনোনয়নের কাজ শুরু করেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। একইসঙ্গে ব্যালট পেপার মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ ক্রয় ও ছাপাখানার সঙ্গে আলোচনাও চলছে। যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ‘সংবিধান অনুযায়ী’ যথাসময়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর কমিশন আগামী দুই মাসের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ইসি কর্মকর্তারা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মালামাল ক্রয়ের জন্য এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ভোটগ্রহণের জন্য ৩৪ লাখ ৪০ হাজার স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ৬ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ স্ট্যাম্পপ্যাড, ১৭ হাজার ৪২০ কিলোগ্রাম লাল গালা, ৫ লাখ ৭৮ হাজার অফিসিয়াল সিল, ১১ লাখ ৫৬ হাজার মার্কিং সিল, ৮৭ হাজার ১০০ ব্রাশ সিল, ৬ লাখ ৬৫ হাজার অমোচনীয় কালির কলম ক্রয় করা হবে। গত ৩ জুন দরপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে তাদের আগামী দুই মাসের মধ্যে মালামাল বুঝিয়ে দিতে হবে।

কর্মকর্তারা জানান, এ নির্বাচনের জন্য প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার রিম কাগজ প্রয়োজন হবে, যা চলতি মাসের (জুন) মধ্যেই সংগ্রহ করতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসি ঘোষিত রোডম্যাপ অনুসারে চলতি মাস থেকে ৩০০ নির্বাচনী এলাকার জন্য ভোটার তালিকা মুদ্রণও শুরু করার কথা রয়েছে। এই সময়ে ছবিসহ ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি প্রণয়ন ও বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া তফসিল ঘোষণা ও পরবর্তীকালে ব্যালট পেপার, বিভিন্ন ফরম, প্যাকেট, নির্দেশিকা, ম্যানুয়াল, মনিটরিং সেল, প্রচারণা, ভোটকেন্দ্র-ভোটকক্ষ নির্মাণ, কক্ষ সংস্কার, ভোটকেন্দ্রের বেষ্টনী নির্মাণ, ভোটকেন্দ্রের মনিহারি দ্রব্য, পরিবহন খরচ, কর্মকর্তাদের ডাক, তার, বার্তাবাহক, জ্বালানিসহ বিভিন্ন নির্বাচনী সামগ্রী কেনার প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে।
এদিকে সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য ৪২ থেকে ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে ইসির পক্ষ থেকে। এ ছাড়া ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য সরকারি ছাপাখানাগুলোর সঙ্গেও প্রাথমিক আলাপ শেষ করেছে কমিশন। এখন ৭ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা তৈরির কাজ চলছে। কারো নামে অভিযোগ উঠলে তার জায়গায় অন্য কাউকে দেয়ার চিন্তা থেকে তালিকায় ১০ শতাংশ বেশি নাম রাখার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরইমধ্যে নির্বাচনের বাজেট পরিকল্পনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন করিয়েছে ইসি। যা গত ৭ জুন জাতীয় সংসদে পেশ করা ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে ৬০০ কোটি টাকা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য। দশম সংসদ নির্বাচনে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ইসির জন্য ১ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।

এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। ব্যালট বাক্সসহ কিছু মালপত্র কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য সরঞ্জাম কেনার প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। বিজি প্রেসসহ সরকারি প্রেসগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যালট পেপারের কাগজ সংগ্রহ করে রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

 

(মানবকণ্ঠ)