ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২২টি চুক্তি সই হলেও, তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে কোনো সমধান সূত্র মেলেনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সম্মতি নিয়েই তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হবে। শেখ হাসিনাকে আশ্বস্তও করেছেন। ‘সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দ্রুত সমাধান সূত্র বের করা হবে।’
শনিবার রাতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত বৈঠকে সেই ‘সমাধান সূত্র’ই দিয়ে এলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রী তিস্তার বদলে তোর্সাসহ তিনটি নদীর পানি দেয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন। তবে, তিস্তার পানিবণ্টনে যে তীব্র আপত্তি রয়েছে তা তিনি আবারো স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে।
বাস্তব প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে মমতা ব্যানার্জি আগেও বলেছেন, মার্চেই তিস্তাগর্ভে পানি থাকে না। ফলে, তিস্তার দু-পাশ বারাবর বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানির তীব্র সঙ্কট তৈরি হয়। এখন জুলাইয়ের আগে বর্ষাও আসে না। ফলে, মার্চ থেকে জুন এই তিন মাস পানিকষ্ট তীব্র হয়ে ওঠে। এমতবস্থায় তিস্তা যেহেতু উত্তরবঙ্গের প্রধান নদী, লাইফলাইন, সেখানকার মানুষকে সমস্যায় ফেলে কী করে পানিবণ্টন সম্ভব?
মমতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, তিস্তার পানি চলে গেলে, চাষবাসের পাশপাশি উত্তরবঙ্গে খাবার পানিরও তীব্র সংকট তৈরি হবে। যে কারণে তিস্তার পানিবণ্টনে সমস্যা রয়েছে।
তাই তিস্তা নয়, হাসিনার কাছে তোর্সাসহ মোট তিনটি নদীর নাম উল্লেখ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। শুধু হাসিনা নন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও এই বিকল্প প্রস্তাব ভেবে দেখতে বলেছেন মমতা। তাতে বাংলাদেশে পানির দুর্ভোগ কমবে বলেই মত মুখ্যমন্ত্রীর।
সাত বছর পর শুক্রবারই ভারত সফরে গেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী নীতির উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে শান্তি ও নিরাপত্তা বাড়াতে কী ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন, তা নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিশদ আলোচনা হয়েছে।
খুলনা ও কলকাতার মধ্যে বাস ও ট্রেন পরিষেবারও আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
এর আগে তিস্তা ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ইন্দো-বাংলা সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেইসঙ্গে আশা প্রকাশ করে মোদি বলেন, আশাকরি শেষপর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এই পানিবণ্টন চুক্তিতে সম্মতি জানাবেন। মোদি বলেন, আজ এখানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন। এরপরই বাংলাদেশের মানুষকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি পূরণে আন্তরিক। চেষ্টা চলছে। এই ইস্যুতে শিগগিরই সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে বলে মোদি আশাপ্রকাশ করেন।
সূত্র: এই সময়