দুর্যোগ মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই: ড. কামাল হোসেন

0
490
blank
blank

ঢাকা: সন্ত্রাস বিরোধী জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়েছেন সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের স্থায়ী পরিষদের সভা থেকে তিনি এ আহবান জানান। বলেন, আমরা ভেবেছিলাম আত্মঘাতি হামলা ফ্রান্স, বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন দেশে ঘটছে। বাংলাদেশ এর থেকে মুক্ত। কিন্তু গত ১লা জুলাই ঢাকার কূননৈতিক এলাকা গুলশান ও  ৭ই জুলাই কিশোরগঞ্জে হামলার পর সেই ধারণা পাল্টে গেছে। বর্তমানের এই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। তাই সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, মানবাধিকার ও নারী সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা সকলের অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখে আরও হামলার আশঙ্কা খুবই আতঙ্কের। আমি তার কথাকে গুরুত্ব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, যেহেতু আরও হামলার হুমকি আছে সেহেতু কোন কারণে ১০ দিন, ১ মাস বা ২ মাস পর দৃষ্টি ঘোরানো যাবে না। আমাদের দেশের মিডিয়াসহ সবার মধ্যে একটি প্রবণতা রয়েছে একটি ঘটনার পর অন্য একটি ঘটনা ঘটলে সবার দৃষ্টি ঘুরে যায়। আগেরটার আর কোন খবর রাখে না কেউ। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ দিন শিক্ষকতা করেছি কিন্তু একজন ছেলেকে কিভাবে মগজ ধোলাই করতে হয় জানতে পারিনি। অথচ এখন একটি গ্রুপ কিভাবে যুবকদের মগজ ধোলাই করে ফেলছে। কিভাবে কি বলে তারা এদের এভাবে বোঝাচ্ছে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে। কোন ধর্মের দোহাই দিয়ে তারা বোঝাচ্ছে।

তিনি বলেন, এই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। তাই আমরা ইতিবাচকভাবে সকল জনগণের ঐক্য চাই। মানবাধিকার সংগঠন, নারী সংগঠনসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে জাতীয় ঐক্যে এগিয়ে আশার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, এই দুর্যোগ মোকাবিলায় বহুদলীয় গণতন্ত্র কার্যকরি করার ব্যাপারে আরও চিন্তা করার সময় এসেছে। সরকার ও বিএনপির জাতীয় ঐক্যের ডাকের বিষয়ে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রস্তাব পেলে আমরা স্থায়ী পরিষদ সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেব সেখানে যাব কিনা। সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু। তিনি বলেন, জঙ্গি হামলা অব্যহত রাখার হুমকির বিরুদ্ধে দ্রুত গতিতে দেশব্যাপী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। এছাড়া সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় বিচার বর্হিভূত হত্যা ও গুম হয়ে যাওয়ার কারণে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে মুক্তচিন্তা লেখক, প্রকাশক, শিক্ষক, সাংবাদিক, ইমাম, পুরোহিত, যাজক, বৌদ্ধভিক্ষু ও বিদেশী নাগরিকসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত, গ্রেপ্তার, তদন্ত ও বিচারে অনাকাঙ্খিত বিলম্ব হয়েছে। জনগণ আশা করেছিল এসব হত্যা মামলার তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার কারন, তথ্যাবলী ও গৃহিত পদক্ষেপ জনসম্মুকে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু সেটা হয়নি। লিখিত বক্তব্যে আইনের শাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে কার্যকর গণতন্ত্র নিশ্চিত, দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ ও জনপ্রশাসন গড়ে তোলা, জনগণের ভোটাধিকার, নিরপেক্ষ নির্বাচন ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনসহ ১২ টি সাংগঠনিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় গণফোরামের পক্ষ থেকে।