৩৪ লাখ যানবাহনের অর্ধেক চালকেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই: কাদের

0
497
blank
blank

স্টাফ রিপোর্টার: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদে জানিয়েছেন, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত যানবাহনের সংখ্যা ৩৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬২০টি। এর মধ্যে ২২ লাখ ৬ হাজার ১৫৫টিই মোটরসাইকেল। এসব যানবাহনের বিপরীতে ড্রাইভিং লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালকের সংখ্যা ১৮ লাখ ৬৯ হাজার ৮১৬ জন। মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত যানবাহনের অর্ধেক চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।

তিনি আরো জানান, দেশে পর্যাপ্ত ড্রাইভিং স্কুল ও ইনস্ট্রাকটর না থাকায় প্রয়োজনী সংখ্যক দক্ষ গাড়িচালক তৈরি হচ্ছে না। এ লক্ষ্যে বিআরটিএ যথাযথ পদ্ধতি ধারাবাহিকভাবে ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর ও ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল রেজিস্ট্রেশন প্রদান করছে। মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে সরকারী দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

এ সময় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মনগড়া রিপোর্ট প্রকাশ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা শুধু রাস্তার জন্যই হয় ব্যাপারটা এমন নয়। জনসচেনতারও প্রয়োজন রয়েছে। এখানে শুধুমাত্র বেপরোয়া ড্রাইভারই দায়ী নয়, আবার রাস্তাও দায়ী না। অনেক ক্ষেত্রে বেপরোয়া পথচারীরাও অনেক সময় সড়ক দুর্ঘটনার কারণ।

অধিবেশনে মন্ত্রী নিজের অভিজ্ঞতার বিবরণ দিয়ে বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে যখন রাস্তা দিয়ে আসছিলাম। আমি দুইটি পয়েন্টে দেখতে পেলাম যে হঠাৎ করে এক ঝাঁক তরুণ রাস্তায় নেমেছে। গাড়ি তো রাস্তায় চলমান। সে সময় যদি কেউ গাড়ির তলায় পিষ্ট হয় কাকে দায়ী করবেন? তার পর পরই দেখলাম একটা মেয়ে রাস্তা পার হচ্ছে মোবাইলে কথা বলতে বলতে। গাড়ি অনেক কষ্টে থামাতে হলো। সে অবস্থায় চলমান গাড়ি যদি তাকে চাপা দেয় সেটার জন্য কে দায়ী হবে? বাস্তবে কেউ আইন মানতে চান না। ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে চলমান যানবাহনের মধ্যে দিয়ে অনেকে রাস্তা পার হন।

তিনিই বলেন, অনেক সময় যাত্রীরা আনন্দে বাসের জানালা দিয়ে হাতটাকে প্রসারিত করেন, বাইরে হাত রেখে মোবাইলে কথা বলেন। তখন আরেকটা গাড়ি এসে আপনার হাতটা নিয়ে গেলে এখানে কে দায়ী? এখানে শুধু বেপরোয়া ড্রাইভার দায়ী নয়, শুধুমাত্র রাস্তাও দায়ী না। জনসচেতনার অভাব ও বেপরোয়া পথচারীও অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণ।

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান নিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির রিপোর্টকে ভুয়া আখ্যায়িত করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এনডিটিভি অনলাইনে দেখলাম ভারতে প্রতি ঘণ্টায় ১৭ জনের মৃত্যু হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের দেশ এশিয়া মহাদেশের মধ্যে এগিয়ে এটা সত্য নয়।

তিনি আরো বলেন, ভুয়া একটা যাত্রী কল্যাণ সমিতি আছে বাংলাদেশে। যাদের কোনো রেজিস্ট্রেশন নাই। চরম সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে এমন একটা লোক এই সংগঠণের নেতৃত্ব দেয়। সময়ে সময়ে মতলবি মহল তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়। মাঝেমধ্যেই এরা মনগড়া তথ্য প্রকাশ করে।

সরকারের তথ্য তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, সদ্য শেষ হওয়া ঈদে পুলিশ এবং সংবাদপত্রে রিপোর্টে সড়ক দুর্ঘটনায় যেখানে ৪২+৪২ অর্থাৎ ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, সেখানে ওই সংস্থাটি মনগড়া তথ্য দাঁড় করিয়েছে বলছে ৩৩৯ জনের নাকি মৃত্যু হয়েছে! আসলে এগুলো মনগড়া রিপোর্ট, মনড়া তথ্য। আমাদের এখানে ১০ হাজার লোকের মৃত্যু গত ২০ বছরে রেকর্ড হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও একটা রিপোর্ট আছে। এই বছরের যেটা রেকর্ড, সেটাও ৫ হাজার বেশী নয়। মনগড়া রিপোর্ট দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা মোটেই উচিত না। তাই এ বিষয়ে সকলেই সতর্ক থাকা দরকার।