ঢাকা: অবশেষে ‘মুক্তিযোদ্ধা’র সংজ্ঞা ও বয়স নির্ধারণ করেছে সরকার। সংজ্ঞা অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নতুনভাবে অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার বয়স ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে কমপক্ষে ১৩ বছর হতে হবে। ‘মুক্তিযোদ্ধা’র সংজ্ঞা ও বয়স নির্ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ৬ নভেম্বর একটি প্রজ্ঞাপণ জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সব ব্যক্তি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তারাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সুপারিশে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নির্ভরযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য তালিকা করতে ‘মুক্তিযোদ্ধা’র সংজ্ঞা ও বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যে সব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন তারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন- যে সব বাংলাদেশী পেশাজীবী মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছেন এবং বিশ্বে জনমত গঠনে সক্রিয় ভুমিকা রেখেছেন। আদেশ অনুযায়ী, যারা মুক্তিযুদ্ধকালীন গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) অধীনে কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারাও মুক্তিযোদ্ধা।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, ইপিআর, আনসার বাহিনীর সদস্য যারা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগহণ করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) সাথে সম্পৃক্ত এমএনএ (মেম্বর অব ন্যাশনাল এ্যাসেম্বলি) ও এমপিএ-রা (গণপরিষদ সদস্য) মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাবেন।
একই সঙ্গে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে নির্যাতিত নারী (বীরাঙ্গনা), স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা, দেশ ও দেশের বাইরে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিকরা, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়, এবং মুক্তিযুদ্ধকালে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দেয়া মেডিকেল টিমের ডাক্তার, নার্স এবং সহকারীরাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।